আজও দেশের ৩০% বেশি গ্রামীণ এলাকায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা তৈরি হয়নি। নেই মোবাইল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু থেকে প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী মৃত্যু রহস্য নিয়ে কার্যত নিরুৎসাহ বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল ব্যাংক এম্পলয়ইজ অ্যাসোসিয়েশন । এতদিন সুর না চড়ালেও মোদীর ব্যাঙ্কিং নীতি কড়া ভাষায় সুর চড়ালেন সংগঠনটি।
নেতাজির জন্ম দিনে বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল ব্যাংক এম্পলয়ইজ অ্যাসোসিয়েশন জেলা সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদীর ব্যাঙ্ক নীতির তীব্র সমালোচনা করলেন সংগঠনের নেতারা। সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজেন নাগর থেকে সংগঠনের চেয়ারম্যান কমল ভট্টাচার্য বর্তমানে দেশ তথা ব্যাংকের এ অবস্থার জন্য কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।কমল ভট্টাচার্য বলেন আজ সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন। সুভাষচন্দ্র বোস শুধুমাত্র ভারত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রণী সৈনিক বা নেতা ছিলেন না তিনি ভারত বর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর ব্যাংকের রূপরেখা কি হবে তার একটি প্রতিবেদন বা কমিশন ১৯৩৫সালে তৈরি করেছিলেন।জহরলাল নেহেরু কে মাথায় রেখে তৈরি হয়েছিল সেই কমিশন। সেটাই ছিল ভারতবর্ষের প্রথম প্ল্যানিং কমিশন।কমিশনের মতামত ছিল ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর কে রাষ্ট্রের অধীনে আনতে হবে। তখন কমিশনের সিদ্ধান্ত ছিল দেশকে স্বাধীন এবং সয়ম্বর করতে হলে অর্থনৈতিক সেক্টর গুলিকে রাষ্ট্রের অধীনে আনা খুবই জরুরী।
১৯৩৫ সালের এর পর আজকে ২০১৯ এ আপনারা ব্যাংক কর্মচারীরা যখন এখানে সম্মেলন করছেন তখন এখানে স্লোগান হচ্ছে "সেভ ব্যাংক সেভ নেশেন"।সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজেন নাগর বলেন রাষ্ট্রীয় ব্যাংক রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য জন্য দেশের শিল্প, কৃষি, সব জায়গার উন্নতির জন্য বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। বর্তমান কেন্দ্র সরকারের ব্যাংকিং নীতির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি ।যে সিদ্ধান্ত গুলো কেন্দ্র সরকার নিয়েছে সেগুলোর আমরা বিরোধিতা করছি। আমরা ব্যাংকে সম্প্রসারণ চাইছি সংকোচন নয়।ব্যাংকের শাখা আরো বাড়ুক কিন্তু ব্যাঙ্কগুলিকে মার্চ করে এক জায়গায় নিয়ে আসার ফলে কমে যাচ্ছে ব্যাংকের সংখ্যা। ব্যাঙ্ক অফ বরোদা ব স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। আমরা সম্প্রসারণ চাই। কোন কর্মসংস্থান নেই ৩৯ শতাংশ কর্মসংস্থানের হার এক শতাংশ লোকের হাতে চলে যাচ্ছে। কোন আয় নেই আমরা চাই কর্মচারী নিয়োগ হোক।যা নিয়োগ হচ্ছে সেটা অস্থায়ী। এই সরকার বলেছিল চাকরি দেবে ১৫ লাখ করে টাকা দেবে, ব্ল্যাকমানি ধরবে।কিন্তু কিছুই হয়নি। সরকারের নোট বন্দির ফলে ব্যাংক কর্মচারী যেমন মারা গেছে ১১০ জন সাধারণ মানুষ মারা গেছেন। আমরা না না রকম ভাবে শারীরিক নিগ্রহের স্বীকার হয়েছি।নোট বন্দি কেন্দ্র সরকারের পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।কেন্দ্র সরকার ব্যাংক নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাকে পাগলামি ছাড়া কিছু বলা যাবেনা।এর আমারা ঘোর বিরোধিতা করেছি। এর আগেও আমরা ২৬সে ডিসেম্বর ধর্মঘট করেছি ৮ও৯ই জানুয়ারিও ধর্মঘট করেছি।আগামী দিনেও কেন্দ্রের এই জনবিরোধী সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের আন্দোলন চলবে। অল ইন্ডিয়া ব্যাংক এমপ্লয়ী এসোসিয়েশনের রাজ্য সহ-সভাপতি সৌমেন চৌধুরিও ব্যাংক নীতির তীব্র বিরোধিতা করেন।তিনি বলেন শুধু পুরুলিয়া জেলা নয় বা রাজ্য নয় কেন্দ্র সরকারের নীতির ফলে সারাদেশে ব্যাংকের অবস্থা খুব খারাপ। এখনো ৬০৯ গ্রামের মধ্যে ১০০ গ্রামে কোন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেই ।ব্যাংক সংযুক্তিকরণ এর ফলে ব্যাংকের ব্রাঞ্চ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে ব্যাংকে পরিসেবা দেওয়া যাচ্ছে না। এটা একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিনিধির জন্য হচ্ছে। কর্মী নিয়োগ এবং নানান দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। অস্থায়ীভাবে নিয়োগ হচ্ছে জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই। গ্রাহকদের কাছে প্রচুর কয়েন জমা হয়ে হয়ে রয়েছে। আর বি আই এ সিদ্ধান্তের জন্যই আজ মানুষের কাছে প্রচুর কয়েন জমে রয়েছে। পুরুলিয়া বাঁকুড়া জেলায় বহু মানুষ আজ কয়েন সমস্যায় ভুগছেন। নিয়ম অনুযায়ী আর বি আই ব্যাংকে কয়েন প্রোভাইড করবে ব্যাংকের থেকে নেবে না। আর বি আইকে কয়েন এক্সপোর্ট করা যাচ্ছে না। ব্যাংকে টাকা রাখার পরিসর ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে ।আগামী দিনে ব্যাংকের সংযুক্তি করনের জন্য আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো। কর্পোরেট লোন নিয়ে কোনো হেলদোল নেই অথচ কৃষকদের লোনকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।এটাই করছে কেন্দ্র সরকার। ফলে সমস্যা দিনের দিন বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনে আমরা লাগাতার ধর্মঘট করতেও রাজি আছি।
No comments:
Post a Comment