২ কোটি টাকা লটারি জেতার অর্থ পাইয়ের দেওয়ার নামে টাকা প্রতারণার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। কাল রাত্রে তাকে গ্রেফতার করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে সাঁকরাইল থানা এলাকার।
বেশ কিছুদিন ধরে ফোনে ম্যাসাজ আসতে থাকে। সেই ম্যাসেজে ওই দম্পতি ২ কোটি টাকার লটারি জিতেছেন বলে জানান হয় তাদের। প্রথমদিকে বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও পরে বিষয়টি জানতে তারাও যোগাযোগ করেন ওই ব্যক্তির সঙ্গে।
এরপরই ওই দম্পতিকে ফোন করে জানান হয় তারা ২ কোটি টাকার লটারি জিতেছেন। সেই টাকা তাদেরকে দেওয়া হবে। যদিও ওই দম্পতির কাছে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য না মনে হওয়াতে তারা আর কথা এগোননি।
এরপর থেকেই ওই নম্বর থেকে বারংবার ফোন করে ওই দম্পতিকে বিরক্ত করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর কয়েকদিন যাওয়ার পরে ওই দম্পতি ফোনে কথা বলেন ওই ব্যক্তির সঙ্গে। কিভাবে টাকা পাওয়া যাবে তাও জানতে চান।
ফোনের ওপারে থাকা ওই ব্যক্তি দম্পতিকে জানান তাদেরকে ৭০ হাজার টাকা দিতে হবে। তাহলে ২ কোটি টাকা তাদের দেওয়া হবে। টাকা দেওয়ার কথা শুনে ওই দম্পতি আর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন নি।
এরপরও বারংবার তাদেরকে ফোন করা হয়। ওই দম্পতিকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখানোর চেষ্টা করা হয়। এরপর তারা সেই প্রলোভনে পা দিলে তাদের জানানো হয় তাদেরকে আজকেই টাকা দেওয়া হবে।
কিন্তু টাকা দেওয়ার আগে তাদেরকে ৭০ হাজারের বদলে ১ লাখ ২০ হাজার নগদ অর্থ দিতে হবে। পাশাপাশি ৫০ ভরি সোনা, দুটি ৩০ হাজারের দামী নতুন মোবাইল ফোন, ১০ হাজার টাকা দামের দুটো আরো ফোন ও যে লোকটিকে তারা পাঠাবে তার হাতে আরও ৩ হাজার টাকা নগদ দিতে হবে।
৩ হাজার টাকা বাদ দিয়ে আর বাকি টাকা ও মোবাইলগুলো একটা প্যাকিং বক্সে ভরে তাদের পাঠানো লোকের হাতে দিতে হবে। ওই জিনিসগুলো পেলেই ওই দম্পতিকে দু কোটি টাকা দেওয়া হবে। তাতে দম্পতি রাজি হয়ে যায়।
তারা ওই ব্যক্তিকে তাদের বসতবাড়ির ঠিকানায় লোককে পাঠাতে বলে। এরপর বিকেলে মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি আসেন সেই টাকা ও সোনা নিতে। কিন্তু দম্পতি টাকা দিতে ঘরে ঢোকার পরই দেখেন চশমার খাপ থেকে সার্জিক্যাল ব্লেড বের করেছেন ওই ব্যক্তি।
যা দেখে সন্দেহ হয় ওই দম্পতির। তারা ওই ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। ডাকেন পাড়া প্রতিবেশীদেরও। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। তিনি জানান, কেউ বা কারা তাকে এই বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে যেতে বলেছিল।
তাকে জানানো হয়েছিল এই বাড়ির রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার জন্য টাকা আনতে হবে। অন্যদিকে, টাকা নিতে আসা ব্যক্তিকে ভুয়ো বুঝতে পারার পরেই এলাকার মানুষ খবর দেন সাঁকরাইল থানায়। পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে তাকে। কোন চক্রের সঙ্গে সে যুক্ত তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
No comments:
Post a Comment