তিনটি নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার গুরু পুরব ও কার্তিক পূর্ণিমার বিশেষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে দেশবাসীর কাছে বলতে চাই, আমাদের তপস্যায় নিশ্চয়ই কোনও না কোনও ঘাটতি ছিল। তিনি বলেন, কিছু কৃষক ভাইদের বোঝাতে পারেননি। আজ গুরু নানক দেবের পবিত্র উৎসব। এটা কাউকে দোষারোপ করার সময় নয়। আজ সারাদেশকে জানাতে এসেছি যে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
তিনি বলেন, চলতি মাসের শেষের দিকে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শুরু করবেন। সেই সঙ্গে প্রকাশ পর্বে আন্দোলনে বসে থাকা মানুষকে ঘরে ফেরার আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন এবং গুরুপুরব এবং কার্তিক পূর্ণিমা উপলক্ষে তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এটাও খুব আনন্দের যে দেড় বছর পর কর্তারপুর সাবিহ করিডোর আবার খুলেছে। তিনি বলেন, 'অনেক চ্যালেঞ্জ আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি।'
তিনি বলেন, কৃষকরা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। একশোর মধ্যে ৮০ জন কৃষক, যাদের ২ হেক্টর জমি রয়েছে। এমন কৃষকের সংখ্যা ১০ কোটির বেশি। তার পুরো জীবনের ভিত্তি এই ছোট্ট জমি এবং এর ভিত্তিতে তিনি নিজের এবং তার পরিবারের জন্য জীবিকা নির্বাহ করেন।
পিএম মোদী বলেন যে, এই জমির টুকরো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছোট থেকে ছোট হচ্ছে। তিনি বীজ, বীমা এবং বাজারের কাজ করেছেন। তিনি বলেন, 'ভালো মানের বীজের সাথে সরকার ইউরিয়া, সয়েল হেলথ কার্ড এবং মাইক্রো সেচকেও যুক্ত করেছে। তিনি বলেন, 'আমরা ২২ কোটি মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড দিয়েছি।'
তিনি বলেন, 'আমাদের সরকারের তৈরি পণ্য ক্রয় গত কয়েক দশকের রেকর্ড ভেঙেছে। কৃষি বাজারের আধুনিকায়নের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। অনেক মাধ্যমে কৃষকদের আইন ব্যাখ্যা করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি।' তিনি বলেন, কৃষকদের কথা ও যুক্তি বুঝতে আমরা কোনও ফাঁক রাখিনি। যেসব আইনের বিরুদ্ধে আপত্তি ছিল সেগুলো বোঝানোর জন্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।'
উল্লেখ, তিনটি নতুন কৃষি আইন ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে সংসদে পাস হয়েছিল। এরপর থেকে কৃষক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আন্দোলন করে এসব আইন প্রত্যাহারের দাবী ওঠে। কৃষক সংগঠনগুলোর যুক্তি ছিল, এই আইনের মাধ্যমে সরকার ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি) বাতিল করে শিল্পপতিদের করুণায় ছেড়ে দেবে। অন্যদিকে সরকারের যুক্তি ছিল, এসব আইনের মাধ্যমে কৃষি খাতে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে এবং কৃষকদের আয় বাড়বে। সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পরও এ বিষয়ে কোনও বোঝাপড়া হয়নি। দিল্লীর সীমানা ঘিরে আন্দোলনে বসে কৃষকরা এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন।
No comments:
Post a Comment