সভ্য জগতে বিজেপি থাকার মত অবস্থায় আছে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, মানুষের উন্নয়নের কথা শিকেয় তুলে আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে তারা ক্ষমতা দখলের পথকে বেছে নিয়েছে, ধর্মান্ধতার মাধ্যমে তারা মানুষকে বিভাজনের রাজনীতির অংশ করতে চেয়েছে, এটা কখনই কাম্য নয়। আর তাই বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন আগ্রাসী মনোভাবের পাশাপাশি অর্থের বিনিময়ে মানুষকে কিনতে চেয়েছে।
বিগত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনেও এ ধরনের একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। এমনকি কেউ রাজি না হওয়ার কারণে তাকে ড্রাগসের কেস দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার উদাহরণ রয়েছে। গণতন্ত্রে যাদের মানুষের ওপর আস্থা থাকে না বা রাখতে পারে না তারাই অর্থের বিনিময়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়, বিজেপিকে কটাক্ষ ফিরহাদের।
'বাংলায় সরকার উন্নয়নমূলক কাজ করে অন্তত এই কথাটা এই বাজ্যের বিজেপি প্রকাশ্যে স্বীকার করুক। উত্তরপ্রদেশের পর এবার উত্তরাখণ্ডে বাংলার উন্নয়নের ছবিকে টুকলি করে নিজেদের ঢাক পেটাতে চাইছে বিজেপি সরকার। বিজেপি আসলে টুকলিতে অভ্যস্ত। যারা সারা বছর পড়াশোনা করে তারা কোনদিন পরীক্ষার হলে অন্যের খাতা দেখে লেখে না। বিজেপি যেহেতু সারাবছর পড়াশোনা করে না, উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারে না, তাই বাংলার উন্নয়নের ছবিকে হাতিয়ার করে মানুষের কাছে সাফল্য তুলে ধরতে চায়, বলে কটাক্ষ রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের।
সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে বাস ভাড়া বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটাই বজায় রাখা হচ্ছে, সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথাও জানালেন রাজ্যের পরিবহন ও আবাসনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
অন্যদিকে প্রাইভেট বাস মালিকদের কথা মাথায় রেখে তেলের বিকল্প হিসাবে সি এন জি ও বিদ্যুৎ বা ব্যাটারিচালিত গাড়িতে কনভার্ট করার বিষয়টিকে জোর দেওয়া হয়েছে। এর জন্য এরা যে শহর কলকাতা অদূরে এই বাস তৈরীর কারখানা গড়ারও কথাবার্তা চলছে। তেলের বিকল্প সিএনজি বা ব্যাটারিচালিত গাড়ি হাতে এসে গেলে বাস মালিকদের তেলের জন্য দাম বাড়ানোর আর কোনও প্রয়োজন থাকবে না, বলেও মন্তব্য করলেন ফিরহাদ হাকিম।
শহর কলকাতা জুড়ে যাতে কোন স্থানে ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা থাকে সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই সমস্ত বড় ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশ কেউ এ বিষয়ে নজর রাখা ও তদারকি করার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। শহরের যে যে স্থানে পাবলিক টয়লেটের উদ্দেশ্যে মানুষ এ ধরনের ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে রাখছে, সেখানে পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা করার বিষয়েও পুরো আধিকারিকদের খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, জানালেন মন্ত্রী।
পাশাপাশি তিনি বলেন, 'ত্রিপুরায় গণতন্ত্র বিপর্যস্ত। ওখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সরকারের পক্ষ থেকে মারধর করা হচ্ছে, প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। এ রাজ্যের বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনার জেরে যে ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশনের সদস্যরা দিল্লী থেকে বাংলায় এসে কুম্ভীরাশ্রু বইয়ে দেন তারা ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে নিশ্চুপ রয়েছেন।'
একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, 'ত্রিপুরার সরকারের ও শাসকদলের এখনও সময় আছে শুধরে যাওয়ার। ওরা যেভাবে মারধর করছে ও মারধরের জন্য প্ররোচনা দিচ্ছে তা কিন্তু আখেরে হিংসাকেই মদত দিচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এখনই যদি ওরা সরে না যায় তাহলে ওদের মনে রাখা উচিৎ ত্রিপুরা যেতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে যেতে হয়।'
'এরাজ্যের মানুষ হিংসায় বিশ্বাসী নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এ রাজ্যের মানুষ এবং শাসক দল সহনশীল মনোভাব নিয়ে চলে, গণতন্ত্রের ওপর আস্থা রাখে। আগামী কুড়ি নভেম্বর ত্রিপুরায় গেলে যদি ওখানের শাসক দলের নেতাকর্মীরা মারধর করে তবে সাধারণ মানুষের স্বার্থে মার খেতেও প্রস্তুত আছি, বলেও সাফ জানান ফিরহাদ।
No comments:
Post a Comment