ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি শ্বসনতন্ত্রের একটি রোগ। সুস্থ ফুসফুসের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নয়। সাধারণত বায়ু দূষণের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। এ রোগে রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। যারা ধূমপান করেন তাদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বেশি। এছাড়াও, ধূমপানকারী ব্যক্তির সাথে বসবাসকারী ব্যক্তির মধ্যে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই শুধু ধূমপান থেকে দূরে থাকবেন না, ধূমপানকারী ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা এড়াতেও চেষ্টা করুন। এ ছাড়া সব ধরনের ধোঁয়া ও তীব্র গন্ধ থেকে দূরে থাকতে হবে। এটি এড়াতে ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে হবে। যারা সিওপিডিতে আক্রান্ত, তাদের অবশ্যই এই শর্তগুলো মেনে চলতে হবে।
আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টারের ইনচার্জ ডাঃ সুনীল কুমার চৌধুরী বলেন, একজন সুস্থ মানুষের ফুসফুস স্পঞ্জের মতো। যখন আমরা শ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেনে নেই, তখন তা রক্তে দ্রবীভূত হয় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বেরিয়ে আসে। কিন্তু সিওপিডি রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ঘটে না। সিওপিডি রোগীর ভিতরে অক্সিজেন দ্রবীভূত হয় না। এ কারণে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। এ কারণেই রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়।
কিছু লোক এটিকে হাঁপানি বলে ভুল করে। হাঁপানির ক্ষেত্রে অক্সিজেনের অভাবের মতো কোনো সমস্যা নেই। হাঁপানি ফুসফুস সম্পর্কিত একটি রোগ, যার কারণে মানুষের শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। সিওপিডি ফুসফুসের শ্বাসনালীর একটি রোগ। হাঁপানিতে, বায়ুনালী ফুলে যায়, যার ফলে শ্বাসনালী সংকুচিত হয়। অতএব, হাঁপানি এবং সিওপিডিকে এক ভেবে ভুল করবেন না। সিওপিডি হাঁপানির চেয়েও বেশি বিপজ্জনক। তাই শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।
করোনার সময় সিওপিডি রোগীদের ঝুঁকি বেশি:
ডাঃ চৌধুরী বলেছেন, করোনার সময় সিওপিডি রোগীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। করোনার কারণে শ্বাসকষ্টের রোগীরা বেশি ভোগেন। অতএব, বর্তমান সময়ে সিওপিডি রোগীদের আরও সতর্ক হওয়া দরকার। কাজের সময় শ্বাসকষ্ট বা নার্ভাসনেস হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান। এ ছাড়া কফের সঙ্গে লাগাতার কাশি, ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তি ইত্যাদিও সিওপিডির লক্ষণ।
বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরুন:
ডাঃ চৌধুরী বলেছেন যে সিওপিডি রোগীদের ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সবসময় মাস্ক পরা উচিত। মাস্ক ধুলো, ধোঁয়া এবং তীব্র গন্ধ থেকে রক্ষা করবে। ঘর পরিষ্কার করার সময়ও মাস্ক পরুন। জনাকীর্ণ স্থানে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। তামাক, ধূমপান এবং অ্যালকোহল একেবারেই সেবন করবেন না। পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি ব্যায়াম করুন। এছাড়াও বেশি করে জল পান করার চেষ্টা করুন।
No comments:
Post a Comment