বিশ্বখ্যাত অনন্য যমজ শিবনাথ ও শিবরাম মারা গেছেন। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, জ্বরের কারণে তিনি মারা গেছেন। দু'জনেরই শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে মধ্যরাতে হঠাৎ করেই মারা যান তারা। এই দুই যমজ সন্তানকে দেখতে বিদেশ থেকে লোক আসতেন, কিন্তু আজ এই দুই নিরীহ মানুষ আর এই পৃথিবীতে নেই।
এই দুটি ছিল এশিয়ার একমাত্র বিরল ধরনের যমজ। শিবনাথ ও শিবরাম দুজনেই দেহের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। উভয়েরই ২টি মাথা, ৪টি বাহু এবং ২টি পা ছিল। দুটোই ছিল ঈশ্বরের অপূর্ব সৃষ্টি। তিনি ২০০১ সালে ছত্তিশগড়ের বালোদাবাজার জেলার কাসদোল বিধানসভার খান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর থেকেই দুজনেই মাঠে বেশ খ্যাতি করেছেন। দুই কোমরে লাগানো শিশুটিকে মানুষ ঈশ্বরের অপূর্ব সৃষ্টি বলে পূজা করত। দেশ-বিদেশের মানুষ দুটি দেখতে গ্রামে পৌঁছে যেত। তাদের দুজনের জীবন এখন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই চলে আসছিল।
বাচ্চা দুটো একসঙ্গেই সব কাজ করত। একসঙ্গে স্নান করা, খাওয়া দাওয়া ও একে অপরকে সাহায্য করে তাদের জীবন ভালোভাবে কাটছিল, কিন্তু অবশেষে অসুস্থতার কারণে আজ দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে। প্রথম থেকেই প্রশাসনও তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রশাসন তেমন নজর দেয়নি। জেলার একমাত্র বিরল ধরনের যমজ হওয়ার কারণে তাদের বিশেষ লালন-পালন করা হতো, তাহলে আজ তাদের অবস্থা কিছুটা ভালো হতো।
গ্রামবাসীরা জানান, শিশু দুটিই ছিল গ্রামের গর্ব। উভয়ের কান্নায় গ্রাম সর্বদা অনুরণিত হয়। দুজনেই দুষ্টু এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। আগে তারা সাইকেলে করে গোটা গ্রাম ঘুরে বেড়াত এবং কিছু সময় দুজনেই স্কুটিতে করে ঘুরে বেড়াত। দুজনেই একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করত এবং সমানভাবে ভালোবাসতও। দুজনকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনারা আলাদা হতে চান কি না, দুজনেই বলতেন আমরা একসঙ্গে জীবন কাটাব। দুটি শিশুই সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব বিখ্যাত ছিল। তার জীবন কাহিনী অনেক নামী চ্যানেলে লোকেদের কাছে সমাদৃত হয়েছে। দুজনেই কিছুদিন ধরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন, সে কারণেই তাদের স্বাস্থ্য খারাপ হয় এবং অবশেষে অসুস্থতার কারণে আজ তারা পৃথিবীকে বিদায় জানায়। গ্রামেই দেহগুলি জ্বালানো হয়। পুরো গ্রাম শোকে নিমজ্জিত।
No comments:
Post a Comment