সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমানো বা বেশি ঘুমানোও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যারা সাড়ে সাত ঘণ্টার কম ঘুমান, তাদের স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের গবেষণায় এই দাবি করেছেন।
গবেষক ও নিউরোলজিস্ট ডক্টর ব্রেন্ডন লুসি বলেন, অসম্পূর্ণ ঘুম বা ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার কারণে মস্তিষ্কের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ে। মস্তিষ্কের উপর এই প্রভাব আপনার চিন্তা এবং বোঝার ক্ষমতা এবং স্মৃতিশক্তির উপর দৃশ্যমান।
গবেষকরা বলেছেন, যদি আপনি ৮ ঘণ্টা ঘুমোবেন ভাবছেন আর ৩০ মিনিট আগে অ্যালার্ম সেট করেন, তাহলে সাড়ে সাত ঘণ্টার ঘুম মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আলঝেইমার বা ভুলে যাওয়ার রোগের ঝুঁকি কমায়।
কীভাবে মস্তিষ্কে আলঝেইমারের ঝুঁকি বাড়ে, বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন। ঘুমানোর সময় আমাদের শরীরে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। এর মধ্যে রয়েছে আমাদের বৃদ্ধি, উন্নতি, কোষের শিথিলতা এবং মানসিক বিকাশ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আমরা এই সুবিধাগুলো পাই না। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া মানসিক ক্ষমতা এবং স্মৃতিশক্তির জন্য খুবই বিপজ্জনক। আপনার স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে, এমনকি অ্যামনেসিয়াও হতে পারে। যারা পর্যাপ্ত ঘুমোন না তারা প্রায়ই স্ট্রেস এবং মানসিক সমস্যার শিকার হয়ে থাকেন। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে মস্তিষ্ক সঠিক পরিমাণে বিশ্রাম পায় না।
এটি ৭৫ বছর বয়সী ১০০জন বয়স্ক মানুষের উপর গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে। গবেষণার জন্য, এই প্রবীণদের মাথায় একটি ছোট মনিটর বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ঘুমের সময় মস্তিষ্কে কী ধরনের কার্যকলাপ হয়েছে, তা মনিটর দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। গড়ে সাড়ে চার বছর ধরে চলা গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি মস্তিষ্কের কার্যকলাপে প্রভাব ফেলে।
বিজ্ঞানীদের মতে, রোগীদের আলঝেইমার রোগের জন্য বিশেষ ধরনের প্রোটিন দায়ী। গবেষণায় জড়িত বয়স্কদের মস্তিষ্কের সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডে ওই প্রোটিনের মাত্রা কত সেটা মাপা হয়েছে। প্রতি রাতে প্রায় সাড়ে সাত ঘন্টা ঘুমানো রোগীদের স্কোর ভাল ছিল। যারা দিনে পাঁচ বা সাড়ে পাঁচ ঘন্টা ঘুমান তাদের এই স্কোর কম পাওয়া গেছে।
ঘুমের অভাব আপনার পরিপাকতন্ত্রের উপরও প্রভাব ফেলে। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে হজম শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে, যার কারণে আপনার পেট খারাপ বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হতে পারে। ঘুমের অভাবে শরীর ও মন সম্পূর্ণ বিশ্রাম পায় না, যার কারণে শারীরিক ব্যথা, শক্ত হয়ে যাওয়া, মাথা ভারী হওয়া, বিরক্তির মতো সমস্যা দেখা দেয়।
No comments:
Post a Comment