আমাদের যে কোনও উৎসবে ঘরে অনেক ধরণের খাবার তৈরি করা হয় এবং বাজার থেকেও কেনা হয়। বিশেষ করে মিষ্টি। কারণ মিষ্টি ছাড়া উৎসব নিজেই বিবর্ণ বলে মনে হয়। এমন পরিস্থিতিতে একজন গর্ভবতী মহিলাকে তার খাদ্যাভ্যাসের প্রতি খুব যত্নবান হতে হবে।
মিষ্টির পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলাদের সেই সব খাবার খাওয়াও কমাতে হবে যা সুগার রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এর কারণ হল, গর্ভবতী মহিলাদের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাই ডায়াবেটিসের শিকার হন। একে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে, প্রসবের সময় অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে, যা শিশুর উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই শরীরে গ্লুকোজ বেড়ে যায়। এই গ্লুকোজ শিশুর পুষ্টির জন্য ব্যবহৃত হয়। এই কারণে, গর্ভাবস্থায় মহিলাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কিন্তু এই সময়ে যদি তারা বেশি মিষ্টি বা এই জাতীয় জিনিস খান, যা গ্লুকোজ বাড়াতে সহায়ক,তাহলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আরও প্রবল হয়।
কি কি ঝুঁকি হতে পারে:
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের সময়, মায়ের শরীরে বর্ধিত গ্লুকোজ নাভির মধ্য দিয়ে যায় এবং শিশুর রক্তে পৌঁছায়। এ কারণে শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে প্রসবের সময় মাকে যেমন নানা সমস্যায় পড়তে হতে পারে, তেমনি সন্তানের আকারের কারণে আঘাতও লাগতে পারে।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ছাড়া জন্মের সময় শিশুর জন্ডিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের ত্রুটি, স্পাইনা বিফিডিয়া, গেঁটেবাত, মূত্রাশয় বা হার্ট সংক্রান্ত রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কিভাবে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে:
অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার যেমন ঠান্ডা পানীয়, পেস্ট্রি, মিষ্টি থেকে দূরে থাকুন। এছাড়াও, আপনার শরীরে গ্লুকোজ বাড়ায় এমন জিনিস খাওয়া কমিয়ে দিন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অতিরিক্ত ওজন গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
যদি পরিবারে আগে থেকে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থেকে থাকে বা প্রথম গর্ভাবস্থায় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তাহলে এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে থাকুন। ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত যোগাসন করুন এবং কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করুন।
No comments:
Post a Comment