শীত শুরু হলেই আমাদের ত্বকে এর প্রভাব সবার আগে দেখা যায়। শীতকালে ঠাণ্ডার কারণে আমাদের ত্বক শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। শুষ্ক এবং ফাটা ত্বক শুধু দেখতেই অকেজো নয়, বেদনাদায়কও। এমন পরিস্থিতিতে ত্বকের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি যাতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে।
বাজারে আজকাল অনেক ক্রিম পাওয়া গেলেও অনেক সময় এগুলোও ত্বকে বিশেষ কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যার সাহায্যে আপনি ঘরে বসেই আপনার ত্বককে নরম করতে পারেন। আজকের প্রবন্ধে, আমরা আপনাকে ত্বককে কোমল করতে এমনই কিছু কার্যকরী টিপস বলতে যাচ্ছি-
অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী। আপনি যদি আপনার ত্বককে নরম ও মসৃণ করতে চান তাহলে অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের কোষ মেরামত করে এবং ত্বককে নরম করে।
এর জন্য আপনার হাত ও পায়ে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল নিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এতে আপনার শুষ্ক ত্বক কয়েক দিনের মধ্যে ফুলের মতো নরম হয়ে যাবে।
ওটমিল: শীতে শুষ্ক ত্বক নরম করতে ওটমিল ব্যবহার করতে পারেন। এটি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটরের মতো কাজ করে। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বকের রুক্ষতা দূর করে। এর পাশাপাশি ওটমিলে উপস্থিত প্রোটিন ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, যা ত্বককে নরম রাখে।
নারকেল তেল: শুষ্ক ও প্রাণহীন ত্বকের জন্য নারকেল তেল খুবই উপকারী। এতে উপস্থিত ফ্যাটি অ্যাসিড হাতের ত্বকে আর্দ্রতা জোগায় এবং শুষ্ক ত্বককে নরম ও মসৃণ করে। এর জন্য আপনার তালুতে কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল নিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এতে করে শুষ্ক ও প্রাণহীন ত্বক কয়েকদিনের মধ্যে নরম হয়ে যাবে।
মাখন এবং বাদাম: আপনার ত্বক নরম এবং কোমল করতে আপনি মাখন এবং বাদাম তেল দিয়ে ঘরে তৈরি ক্রিমও তৈরি করতে পারেন। এর জন্য একটি পাত্রে দুই টেবিল চামচ মাখন ও এক চা চামচ বাদাম তেল নিয়ে দুটিই ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর এই ক্রিমটি আপনার ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। বাদাম তেলে ভিটামিন ই পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে যা শুষ্ক ও ফাটা ত্বক নিরাময়ে সাহায্য করে। আপনি চাইলে এই ক্রিমটি একটি ছোট পাত্রেও সংরক্ষণ করতে পারেন।
মিল্ক ক্রিম: শুষ্ক এবং নিস্তেজ ত্বকের জন্য মিল্ক ক্রিম একটি অনন্য ঘরোয়া প্রতিকার। মিল্ক ক্রিমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাট থাকে যা ত্বকের হারানো আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এতে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের পিএইচ লেভেল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এই কারণেই বাজারে পাওয়া ক্রিম এবং ময়েশ্চারাইজারগুলিতে দুধের ক্রিম ব্যবহার করা হয়।
লেবু, চিনি এবং মধু: কোমল ত্বক পেতে লেবু, চিনি ও মধু দিয়ে তৈরি স্ক্রাবও ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা ত্বককে কোমল করার পাশাপাশি ত্বকের কালো ভাবও দূর করে।
এর জন্য একটি পাত্রে দুই চামচ মধু ও এক চামচ চিনি নিন। এবার এতে একটি লেবুর রস মিশিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি আপনার ত্বকে ম্যাসাজ করুন এবং কিছুক্ষণ রেখে দিন। এরপর পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
No comments:
Post a Comment