প্রদীপের নিচে আঁধার - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 2 November 2021

প্রদীপের নিচে আঁধার


আলিপুরদুয়ার: যাদের হাতে গড়া প্রদীপের আলোয় দীপাবলী কিংবা বিভিন্ন পূজায় আলোকিত হত গৃহস্থের বাড়ি কিংবা দেবালয়, আজ তারাই অন্ধকারে নিমজ্জিত। প্রায় ৬০ বছর আগে ১৯৬২ তে বিহার থেকে আসা চার ভাই বসবাস শুরু করেছিলেন আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের শিশুবাড়ি গ্রামে। আর সেই চার ভাই নিজে হাতেই শুরু করেন মাটির প্রদীপ সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করা। চার ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই গত হয়েছেন। অবশিষ্ট বৃদ্ধ দুই ভাই মৃৎশিল্পটিকে কোন রকম বাঁচিয়ে রেখেছেন শুধু মাত্র পেটের দায়ে।


কয়েক বছর ধরেই মন্দা চলছে ব্যবসা। বিশেষ করে করোনা দাপটে ব্যবসা লাটে উঠেছে। ফলে চরম আর্থিক সমস্যায় ভুগছে পরিবারটি। দুর্গা পূজা সহ অন্যান্য ঘরোয়া পূজা গুলিতে পসার তেমন জমেনি। কালী পূজা বা দীপাবলীতেও তেমন আশার আলো দেখছেন না তারা। ব্লকের সকল মৃৎশিল্পীদের একই অবস্থা। চাহিদা কমছে মাটির প্রদীপের। বাড়ছে রকমারি রঙ -বেরঙের বৈদ্যুতিক মোমবাতি, টুনি লাইট, এলইডি বাল্বের প্রভাব। এছাড়া মাটির অনান্য সামগ্রী হাঁড়ি, কলসি, ঘট, ইত্যাদি বিক্রিতেও ভাটা পরেছে। কয়েক বছর আগেও মাটির প্রদীপ কিনতে ভীড় জমাত চা বাগান সহ গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ। কিন্তু বৈদ্যুতিক বাল্বের প্রতি অধিকাংশ মানুষ আকৃষ্ট হওয়ায় মাটির প্রদীপের চাহিদা ক্রমশ কমেছে।  


মৃৎশিল্পী শংকর পন্ডিত বলেন, 'করোনা পরিস্থিতির জন্য সারা বছর বিক্রি-বাট্টা নেই। কঠিন পরিস্থিতি মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে। প্রায় ৬০ বছর ধরে বাংলায় বসবাস করছি। ভোট দিচ্ছি তবুও কোন সুযোগ-সুবিধা পাইনি। মাটি আনার পুঁজি টুকুও অভাবের তাড়নায় শেষ করে ফেলেছি। এই বয়সের অন্য কোন কাজ করার সামর্থ্যও নেই। সরকারি কোনও সাহায্য পাইনি। সরকারি সাহায্য না পেলে নিজেদের জীবনের আলো এক দিন নিভে যাবে।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad