চীনের বেশিরভাগ শহরে সুপারমার্কেটের বাইরে মানুষের দীর্ঘ লাইন। আতঙ্কিত মানুষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেশি করে পণ্য কিনতে চাইলেও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এমন অবস্থায় ধাক্কাধাক্কি ও মারামারির মতো দৃশ্য সাধারণ হয়ে উঠেছে। এসবই হয়েছে সরকারের নির্দেশের পর যেখানে জনগণকে প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করতে বলা হয়েছে। চীন সরকার বলছে, করোনার সম্ভাব্য হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শীতে সংক্রমণ বাড়তে পারে
ওয়েবসাইট WION-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, চীনে করোনার নতুন কেস সামনে আসায় সরকার আতঙ্কিত। শীতে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কায় মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। মানুষ আরও বেশি করে পণ্য কেনার চেষ্টা করছে। তাই চাহিদা ও সরবরাহের ব্যবধান মেটানো কোম্পানিগুলোর জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিক্রেতার স্টক খালি হয়ে যাচ্ছে
আর্মি বিস্কুট এবং দুপুরের খাবার চীনে অনলাইনে সবচেয়ে বেশি সার্চ করা আইটেম হয়ে উঠছে। আলিবাবার ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ভাত, সয়া সস, চিলি সসের চাহিদা অনেক বেশি, কিন্তু মানুষ সব পণ্য পেতে পারছে না। স্থানীয় বিক্রেতাদের মজুদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে, চীনের পরিবারের স্টকপাইল তালিকাটি শীর্ষ অনুসন্ধানে রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১ নভেম্বর স্থানীয় সরকারগুলিকে দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা এবং জরুরী প্রয়োজন মেটাতে শাকসবজি, তেল এবং মুরগির মাংস সহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি মজুত করতে উৎসাহিত করার জন্য লোকদেরকে নির্দেশ দেয়।
যুদ্ধের প্রস্তুতি নাকি করোনা?
সরকারের এ নির্দেশনার পর জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনুমান করা হচ্ছে যে চীন তাইওয়ানের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাই জনগণকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুত করতে বলা হয়েছে। একই সময়ে, কিছু লোক সম্ভাব্য লকডাউনের দৃষ্টিকোণ থেকেও এটিকে দেখছেন। তিনি মনে করেন, করোনার সামনে নতুন নতুন আক্রান্তের সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে এবং তারই আওতায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, সরকার বলছে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই, এটি শুধুমাত্র সতর্কতা হিসাবে করা হয়েছে।
'গতবার এমন কিছু ছিল না'
যদিও সরকার বলছে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ওয়েইবোতে মানুষ নানাভাবে মন্তব্য করছেন। একজন লিখেছেন, 'গত বছর যখন করোনা চরমে ছিল, তখনও সরকারের পক্ষ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করার কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক অনিবার্য।"
No comments:
Post a Comment