প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রেসকার্ড নিউজ: কথায় বলে, 'গেঁয়ো যোগী যে ভিখ পায় না', আর তার জ্বলন্ত উদাহরণ থানকুনি পাতা। ছোট বড় প্রায় সব ধরনের রোগ সারাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির জুড়ি মেলা ভার। অথচ এটি প্রায়শই অবহেলিত।
থানকুনি পাতার উপকারিতা বলে শেষ করা যায় না। কোথাও কেটে গেলে এই পাতার রস করে লাগান, দ্রুত রক্ত বন্ধ হবে। এই পাতার রস খেলে শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়, ফলে দেহের প্রতিটি অঙ্গে বিশুদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়ার কারণে পা ফুলে যাওয়া বা যন্ত্রণা হওয়ার মতো সমস্যা দূরে থাকবে। এটি খাওয়ার ফলে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধে না, ফলে হার্ট, কিডনি ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে না। থানকুনি পাতায় এসিয়াটিকোসাইড (Asiaticoside) নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা আপনার হজমে সাহায্য করে। পেটখারাপ বা ডায়রিয়ার চিকিৎসাতেও এটি কাজে আসে।
এটি আপনার অ্যাংজাইটি ও মানসিক অবসাদেরও প্রকোপ কমায়। নিয়মিত এই পাতা খেলে আপনার স্মৃতিশক্তির উন্নতি তো ঘটবেই, সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বাড়বে চোখে পড়ার মতো। বয়স্ক ব্যক্তিরা যদি নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খান তাহলে শেষ বয়সে অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। এছাড়া রাতে যদি আপনার ঘুম না আসে তাহলে এই পাতা আপনাকে ঘুমোতেও সাহায্য করবে।
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে আপনি যদি দু চামচ থানকুনি পাতার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খান তাহলে রক্তে মিশে থাকা টক্সিক উপাদানগুলি প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যাবে, ফলে আপনার শরীরে কোনও বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এছাড়া এক চামচ থানকুনি পাতার রসের সাথে এক চামচ শিউলি পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর ও সর্দি-কাশির মতো সমস্যাও দূর হবে। ব্লাড প্রেশার ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এটি খুব উপকারী। চুল পড়া কমাতে ও ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতেও এটি বিশেষ কাজ দেয়।
এটির অত্যধিক ব্যবহারে কয়েকটি সমস্যাও হতে পারে। যেমন; পেটে যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা, চুলকানি, অ্যালার্জি, হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি। অপারেশন হবার আগেও এটি খাওয়া উচিত নয়।এখন আপনি থানকুনি পাতা ব্যবহার করুন আপনার সমস্যা অনুযায়ী।
আজ এখানেই শেষ করছি। আগামী সপ্তাহে আবার হাজির হবো অন্য কোনও শারীরিক সমস্যার সমাধান নিয়ে।
No comments:
Post a Comment