ত্রিপুরা জুড়ে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই পানিসাগর এবং ধর্মনগর মসজিদে অগ্নিসংযোগের গুজব রটানো হয়। এই বিষয়ে এক ট্যুইট বার্তায় রাজ্যবাসীকে সতর্ক করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। সেইসঙ্গেই পুলিশ এও জানিয়েছে, গুজব ছড়ানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো খবর ছড়ানোর পেছনে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজ শুরু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ত্রিপুরা পুলিশের ট্যুইটে দাবী করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পানিসাগরের রোয়াবাড়ি এলাকায় চামটিলা জামে মসজিদে মঙ্গলবার দুষ্কৃতকারীরা অগ্নিসংযোগ করেছে বলে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও প্রচারিত হয়। শুধু তাই নয়, প্রায় দশটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে এবং তাতে ওই দোকানগুলো ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটাও দেখা যায়। ওই ভিডিওর কারণেই মুসলিম সম্প্রদায়ের দুষ্কৃতকারীরা হিন্দুদের দোকানে হামলা করে। মঙ্গলবার রাতে চুড়াইবাড়ি, কদমতলা, প্রেমতলা এবং ফুলবাড়ি এলাকায় কয়েকটি হিন্দুদের দোকানে ভাঙচুর করা হয়।
চুড়াইবাড়িতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। ওই দিন রাত আনুমানিক দশটা নাগাদ সেখানে একদল মুসলিম দুষ্কৃতকারী প্রথমে রেলওয়ে জংশনের হিন্দু দোকানপাট এবং স্বরূপ সাহা নামল ব্যক্তির দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর ধীরে ধীরে আক্রমণকারীরা অন্যত্র চলে যাওয়ার পর একই কায়দায় একদল হিন্দু দুষ্কৃতকারী ঘটনাস্থলে এসে মুসলিম দোকানপাটে হানা দেয়। যদিও সেইসময় ঘটনাস্থলে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফ্রান্সিস ডারলং এবং চুড়াইবাড়ি থানার ওসিসহ বিশাল পুলিশবাহিনী ছুটে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। পাশাপাশি, পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশের পেট্রোলিং গাড়ি রাতভর টহল দেয় এলাকায়।
এছাড়াও ওই দিন রাতেই ধর্মনগর মহকুমা শাসক কমলেশ ধর ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং বুধবার সকালে চুড়াইবাড়ি, কদমতলা এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পানিসাগরেও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত এই জায়গাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
এক ট্যুইট বার্তায় ত্রিপুরা পুলিশ জানিয়েছে, 'পানিসাগরে চামটিলা জামে মসজিদে অগ্নিসংযোগের কোনও ঘটনা ঘটেনি। অন্য রাজ্যের ভিডিও ত্রিপুরা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ত্রিপুরায় মুসলিম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন এমনই ভাবাবেগে প্রচার চালানো হয়েছে ট্যুইটারে। রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে ত্রিপুরা পুলিশের বার্তা, 'সমস্ত গুজব এড়িয়ে চলুন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোনও বার্তায় ভরসা না করে এ ধরনের বার্তা পুলিশের নজরে আনুন। ত্রিপুরা পুলিশ আরও জানায়, গুজব ছড়ানোর ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি ভুয়ো খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানোর পেছনে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদেরও খোঁজ শুরু করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment