দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্নতা যে কোনও মানুষের জন্য মারাত্মক হতে পারে। কেউ যখন মানসিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যায়, তখন তার কিছু করতে ভালো লাগে না এটাই স্বাভাবিক। এমন পরিস্থিতিতে চাকরি পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। কখনও কখনও বসরা এটি বোঝেন এবং তারা কর্মচারীর সম্পূর্ণ যত্ন নেন, তবে অনেক বস আছেন যারা কেবল তাদের কাজ নিয়েই উদ্বিগ্ন। তারা তাদের কর্মচারীর স্বাস্থ্য এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে চিন্তা করে না। এমনই একটি ঘটনা আজকাল আলোচনায়।
ব্রিটেনে বসবাসকারী ৪১ বছর বয়সী ড্যান রো ডেভিড উড ব্যাঙ্কিং নামে একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন, যেটি দেশের প্রধান মুদি দোকানে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করে। ড্যান ২০ বছর ধরে মানসিক চাপে ভুগছিলেন এবং তিনি প্রায়শই তার কর্তাদের এটি সম্পর্কে বলতেন। তিনি প্রায়ই চাকরিতে না এসে অসুস্থ নোট পাঠাতেন। ২০২০ সালের মার্চে ব্রিটেন যখন করোনার কবলে পড়ে তখন ড্যানের অবস্থা আরও খারাপ হয়। তার হতাশা অনেক বেড়ে যায় এবং বেশ কয়েকদিন অফিসে যাননি।
একদিন যখন কোম্পানিতে একটি ইভেন্ট ছিল, সেখানে যাওয়া তার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু ড্যান সেখানেও আসতে রাজি হননি। তিনি বার্তা দিয়েছিলেন যে তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। তিনি বেশ কয়েকবার ক্যাব বুক করলেও তা বাতিল করেন। এই ঘটনার আগে, ড্যান তার অফিসে মেডিক্যাল রিপোর্টও দেখিয়েছিলেন, যা প্রমাণ করে যে তিনি হতাশার রোগী এবং আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন।
ড্যান যখন ইভেন্টে পৌঁছাতে পারেনি, তখন তার বস রাগ করে তাকে অফিস থেকে বহিস্কার করে। ড্যান এই বিষয়ে আদালতে আপিল করলে, কয়েকদিন পর তিনি জানতে পারেন যে তার আপিলও বাতিল হয়ে গেছে। আপিল বাতিলের নোটিশ দেখে ড্যান খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং একদিন তিনি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। এরপর তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে আদালত আবার তার আপিলের শুনানি করেন।
আপিল খারিজ হওয়ার পরই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে চিকিৎসকদের রিপোর্ট থেকে আদালত গ্রহণ করেন। এমন অবস্থায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করাটা ভুল ছিল। আদালত স্বীকার করেছে যে চাকরি থেকে বরখাস্ত ড্যানের উপর খারাপ প্রভাব ফেলেছে। আদালত বলেছে, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন থাকার সময় কোম্পানিটিকে চাকরিচ্যুত করা উচিত হয়নি।
প্রথমে তাদের তদন্ত করা উচিৎ ছিল এবং ড্যানের অফিসে না আসার সঠিক কারণ কী তা খুঁজে বের করা উচিৎ ছিল। এই মামলার পরে, আদালত কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ড্যান-কে ৫১ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
No comments:
Post a Comment