কলকাতা: নিজের স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিমায় শুভেন্দু অধিকারী বাবুল সুপ্রিয়াকে বিঁধে বলেন, ‘পিসি ভাইপোর সঙ্গে কী চুক্তি হয়েছে?’ বাবুল এর উত্তর দিতে মাত্র কিছুক্ষণ সময়ই নেন। আর জবাব দিতে গিয়ে ছক্কায় হাকালেন বাবুল। তিনি শুভেন্দুকে বলেন, ঘরের ভেতরে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে। এমনকি তিনি বিজেপিকে কাঁকড়া দল বলতেও দ্বিধা করেননি।
বৃহস্পতিবার বাবুল সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, বিজেপি থেকে যিনি আমাকে নৈতিকতার জ্ঞান দিচ্ছেন তাঁকে বলবো, নিজের বাড়ির অন্দর থেকে পাঠটা শুরু করতে | আর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে আমি যা করতে পেরেছি তা আগে করে দেখাতে তারপর যা বলার বলতে | কাঁকড়ায় ভরা একটি দল, যারা নিজেদের প্রকৃত কর্মীদের সাথে নির্লজ্জ বিশ্বাসঘাতকতা বেইমানি করে আর বহিরাগতদের চার্টার্ড প্লেনে চড়ায়, সেই বিজেপির জন্য ২০১৪ থেকে যেটুকু করেছি তাতেও আমি যেমন গর্বিত, আজ অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আড়াই বছর বাকি থাকতেও বিজেপির টিকিটে বিজেপির জন্য জেতা সাংসদ পদ নির্দ্বিধায় ছেড়ে দিতে পেরেও আমি সমান গর্বিত |
বাবুল কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন? বাবুলের কথার দুটি ইঙ্গিত থাকতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বাবুল দল ছাড়ার কয়েকদিন আগে বিজেপি মন্ত্রিসভা গঠন করেছিল। সেখানে জায়গা হয়নি বাবুলের। অন্যদিকে, বিজেপি ভোটের আগে জড়ো হওয়া দলগুলোর বিরোধিতা করলেও বাবুল ফোন পাননি। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বরাবরই আদায়-কাঁচকলায়। এই পরিস্থিতিই বাবুলের হৃদয়ে তৃণমূলকে স্থান দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঐ পোস্টে নৈতিক শিক্ষার অছিলায় বাবুল সেই কথাগুলোও উল্লেখ করেছেন। পোস্টে লেখা, 'ছোট বেলায় শুনেছিলাম যে, যদি নিজের মন ও হৃদয় বলে যে কেউ অন্যায় ভাবে তোমাকে দশ টাকা জরিমানা দিয়েছে তাহলে জরিমানাটা না দিয়ে আদালতে লড়াই করে, দরকার হলে একশো টাকা খরচ করে সেই জরিমানা revoke করাও | অর্থাৎ অন্য ভাবে বলা যায়, বিজেপির অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, প্রাপ্তবয়স্ক বাবুল আজ যে কোনও ক্ষতিতে রাজি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মন্ত্রণালয় থেকে নাম বাদ দেওয়াকে অন্যায্য জরিমানা হিসেবে মনে করছেন। তিনি অতীত মুছতে চাননি, কিন্তু বিজেপির সঙ্গে কাটানো দিনগুলোও তুলে ধরেছেন পোস্টে। "অন্যায় ভাবে করা জরিমানা, যে যাই বলুক, কখনই তা মেনে নেবে না | মেনে নিইনি আর তাই আড়াই বছর বাকি থাকা সত্ত্বেও বিজেপির হয়ে জেতা সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে একটুও দ্বিধা করিনি | ১৯৯২ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের নিরাপদ চাকরি ছেড়ে বম্বে যাওয়ার সময়ও আমি ভয় পাইনি, আজও পাইনা |'
No comments:
Post a Comment