সনাতন ধর্মে তুলসী উদ্ভিদ অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু এর শুধু ধর্মীয় দিক থেকে নয়, চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এর গুরুত্বও রয়েছে। আয়ুর্বেদে তুলসী পাতা খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। তুলসী পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, জিংক এবং আয়রনের মতো পুষ্টি উপাদান, যা অনেক ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় উপকারী।
প্রতিদিন সকালে তুলসী পাতা খেলে অনেক রোগের উপশম হয়। আজকের নিবন্ধে, আমরা আপনাকে তুলসী পাতার উপকারিতা সম্বন্ধে বলছি।
আয়ুর্বেদে, তুলসীকে মহৌষধি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, তুলসিতে এমন বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন সকালে তুলসীর ২-৩ টি তাজা পাতা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
তুলসী খাওয়া আমাদের মুখের জন্যও খুব উপকারী। তুলসী পাতা খেলে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রতিদিন কিছু তুলসী পাতা মুখে চুষলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। কিন্তু খেয়াল রাখবেন তুলসী পাতা দাঁত দিয়ে চিবানো উচিৎ নয়।
তুলসী পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়, যা সর্দি-কাশিতে দ্রুত আরাম দেয়। যদি সর্দি বা হালকা জ্বর হয়, তাহলে জলে তুলসী, গোল মরিচ এবং গুড় মিশিয়ে ডিকোশন তৈরি করলে উপকার পাওয়া যায়।
মানসিক চাপ কমাতেও তুলসী খাওয়া খুব উপকারী বলে মনে করা হয়। তুলসী পাতায় অ্যাডাপটোজেন নামক উপাদান থাকে, যা মানসিক চাপ কমাতে কাজ করে। নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে রক্ত চলাচল উন্নত হয় এবং মাথাব্যথায়ও উপশম হয়।
হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় তুলসী খাওয়া খুবই উপকারী। প্রতিদিন তুলসী পাতা খেলে এটি সর্দি বা কফকে পাতলা করে এবং শরীর থেকে বার করে দেয়। এছাড়া এটি আমাদের ফুসফুসকে পরিষ্কার করে ও তার কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
মহিলাদের পিরিয়ডে অনিয়মের সমস্যা খুবই সাধারণ ব্যাপার। এমন অবস্থায় তুলসীর সাহায্যে এই অনিয়মের চিকিৎসা করা যায়। এজন্য নিয়মিত তুলসীপাতা খান। এটি আপনাকে আপনার পিরিয়ড নিয়মিত হতে সাহায্য করবে।
তুলসী খাওয়া ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তুলসী সেবন শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বার করতে এবং বিপাককে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে । প্রতিদিন তুলসী পাতা খাওয়া ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কিভাবে খাবেন: রাতে ৪-৫ টি তুলসী পাতা ভালো করে ধুয়ে একটি পাত্রে জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে জল দিয়ে এই পাতাগুলি গিলে ফেলুন এবং তারসাথে বাটির জলও পান করুন। এগুলি ছাড়াও, আপনি পাতাগুলি জলে রেখে সেদ্ধ করে, তারপরে ফিল্টার করে চায়ের মতোও পান করতে পারেন।
No comments:
Post a Comment