বাংলাদেশের মুসলিমদের উগ্রতা উপড়ে ফেলে আক্রান্ত হিন্দুদের রক্ষা করতে মোদী সরকারের ওপর রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 17 October 2021

বাংলাদেশের মুসলিমদের উগ্রতা উপড়ে ফেলে আক্রান্ত হিন্দুদের রক্ষা করতে মোদী সরকারের ওপর রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ


প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক: স্বস্তা বা নকল হিন্দুত্ব দরদী নয়, কঠোর হিন্দুত্বের ভূমিকা নিয়ে হিন্দুদের রক্ষার জন্য রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে চাপ দিচ্ছে বিজেপিকে ।


পশ্চিমবঙ্গের শাসক তৃণমূল সহ বেশ কিছু আঞ্চলিক দল ছাড়াও অবিজেপি দলের কর্মী সমর্থক থেকে নাগরিক সমাজের তরফে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয় শঙ্করের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। 1947 সালের দেশ ভাগের পর 1971 সালে পাকিস্তান থেকে পৃথক হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম এবং পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত বহু হিংসা হয়েছে বাংলাদেশে। অথচ 21 সালের পুজোর সময়ে কুমিল্লা থেকে শুরু হওয়া হিন্দুদের উপর হামলা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় নজির বিহীন প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া পদক্ষেপ করার চাপ যেভাবে তৈরি হয়েছে তা অতীতে হয়নি। 


 মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস শনিবার, 16 অক্টোবর, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার বিরুদ্ধে 'কার্যকর ভূমিকা' না পালন এবং 'নীরব দর্শক' না থাকার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করেছে। 


 বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে লক্ষ্য করে, টিএমসির মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে দাবি করেন যে, বাংলাদেশে চলমান সহিংসতার নিন্দা করতে মোদী সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। 


 টিএমসি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় 'নীরব দর্শক' বলে কেন্দ্রকে নিন্দা করেছে। কুনাল ঘোষ বলেছিলেন যে টিএমসি প্রতিবেশী বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চায়।


 কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে চলমান সহিংসতার প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করে টিএমসি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বাংলায় একটি ট্যুইটে লিখেছেন, “বাংলাদেশ থেকে কিছু বিরক্তিকর খবর আসছে।  যদিও শেখ হাসিনা সরকার এবং সে দেশের অনেক মানুষ এই ধরনের কাজের বিরোধিতা করছে, @PMOIndia কেন নীরব দর্শক?  কেন্দ্রকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে এবং বিজেপিকে নকল হিন্দুত্বের সস্তা নাটক করা উচিৎ নয়।  আমরা ভারত ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চাই।"



 তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন যে, বাংলাদেশের  হিন্দুদের সুরক্ষায় কেন্দ্রকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে এবং বিজেপির উচিৎ হিন্দুত্বের 'সস্তা নাটক' করা থেকে বিরত থাকা।


 কুণাল ঘোষের এই বক্তব্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়  বাংলাদেশি সমকক্ষদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরার পর, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারকে দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে যে ভারতীয় মিশন বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করছে।


 পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিরোধী দলীয় নেতা এবং বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এর আগে ইসকনের একটি ট্যুইট শেয়ার করেছিলেন, যেখানে সংগঠনটি দাবি করেছিল যে বাংলাদেশে তার নোয়াখালী এলাকার মন্দিরে হামলা হয়েছে এবং একজন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানান।


 বাংলাদেশে, বেশ কয়েকটি হিন্দু মন্দির ও দুর্গাপূজার প্যান্ডেল ভাঙচুরের পর দাঙ্গাবাজ ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় চারজন নিহত হয়, যার ফলে ২২ টি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সাম্প্রতিক এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, অপরাধীদের শিকার করে শাস্তি দেওয়া হবে।


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপত্রের মন্তব্য থেকে পরিস্কার যে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষা করার জন্য কড়া হতে বলেছে এবং হিন্দুত্বের 'সস্তা নাটক' করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। 


পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা যে ভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তাহীনতা এবং হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছে প্রথা ভেঙে তাও নজির বিহীন। 


এমনকি বাম নেতা তথা সিপিআইএমের মত দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী থেকে শুরু করে ভারতের মুসলিম সংগঠনগুলো কঠোর সমালোচনা করেছে এবং বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের উগ্রতা উপড়ে ফেলা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন নানা স্তরের মানুষ। সিপিআইএম দলের তরফে মুসলিমদের উগ্র সাম্প্রদায়িক হামলাকে নিন্দা করা হয়েছে। 


সাংবাদিক থেকে সাধারণ নাগরিক বাংলাদেশের নাগরিকদের ভারতের চিকিৎসা পরিষেবা প্রধানের জন্য ভিসা বন্ধ এবং পণ্য রফতানি স্থগিত রাখারও আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি। 


ভারত বাংলাদেশের মধ্যেকার সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং মজবুত করতে নানা কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছেন দুই তিন দশক ধরে এমন ব্যক্তিরাও বাংলাদেশের বিরাট অংশের মুসলিমদের উগ্রতা নিয়ে সমালোচনা করছেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad