ব্রেন স্ট্রোক একটি প্রাণঘাতী রোগ যা প্যারালাইসিস নামেও পরিচিত। এ সময় মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত প্রবাহ হয় না বা রক্তনালী ফেটে যায়। এই অবস্থায় ব্যক্তি কথা বলার এবং বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে,৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
এর পাশাপাশি যারা উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অ্যালকোহল সেবন ইত্যাদি রোগে ভুগছেন তাদের ব্রেন স্ট্রোকের প্রবণতা বেশি। কিন্তু প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু স্বাস্থ্যকর জিনিস অন্তর্ভুক্ত করলে এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যায়। চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক
স্ট্রোকের লক্ষণ: স্ট্রোকের পরেই মস্তিষ্কের কোষগুলি মারা যেতে শুরু করে। এমতাবস্থায়, এই সময়ে রোগীর মধ্যে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যায়।
. অজ্ঞান
. প্রচন্ড মাথাব্যথা
. হাঁটতে সমস্যা
. কথা বলতে অসুবিধা
. শরীরে দুর্বলতা এবং দৃঢ়তা
. শরীরের অসাড়তা
. দ্বিগুণ দৃষ্টি বা ঝাপসা দৃষ্টি
স্ট্রোকের কারণে: বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুল জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ৫৮ শতাংশ বেড়ে যায়। বিপরীতে, গোটা শস্য, ফলমূল, শাকসবজি এবং মাছ ইত্যাদি খাওয়া প্রায় ৩০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।
মটরশুঁটি : হৃদয় ও মন উভয়ের জন্যই ভালো বলে মনে করা হয়। এতে বি ভিটামিন, ফোলেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে। এটি সেবন করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ কমে যায়।
সবুজ শাক - সব্জি :সবুজ শাকসব্জি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর। এর সেবন ধমনীতে প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর সাথে রক্তের ধমনীতে রক্তের প্রবাহ ভালো হয়। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
ফল: ফলের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। এমন অবস্থায় এগুলো সেবন করলে শরীর প্রয়োজনীয় সব উপাদান সহজেই পায়। এ ছাড়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কম।
কলা: কলা মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ১টি করে কলা খেলে শরীরে ১.৫ গ্রামের কম পটাশিয়াম পাওয়া যায়। এমন পরিস্থিতিতে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কলা খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে।
ওটস, বাদাম এবং সয়া: এগুলোতে নিউট্রিয়েন্ট অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর। এগুলো খাওয়া খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রায় ২৮ শতাংশ কমাতে সাহায্য করে। এভাবে স্ট্রোক এড়ানো যায়। এর পাশাপাশি এগুলো খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। এভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
কম চর্বিযুক্ত দুধ: কম চর্বিযুক্ত দুধে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি খাওয়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এইভাবে, স্ট্রোক প্রতিরোধ করা হয়।
বার্লি এবং ভুট্টা: বার্লি এবং ভুট্টা ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। এগুলো খেতে সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো সেবন করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়।
স্যামন এবং অন্যান্য মাছ: আপনি যদি আমিষ খেতে পছন্দ করেন তবে আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় স্যামন এবং অন্যান্য মাছ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এদের মধ্যে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি পাওয়া যায়। এটি খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। এর পাশাপাশি রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যাও এড়ানো যায়।
No comments:
Post a Comment