ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণ মানুষের স্বাস্থ্যকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছে। এটি শরীরে নানা রোগের জন্ম দেয়। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় চমকপ্রদ একটি বিষয় সামনে এসেছে। এই গবেষণায় জানা গেছে যে বায়ু দূষণ শুক্রাণুর সংখ্যাও কমিয়ে দেয়। গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন যে এর পিছনে কারণ সাধারণত একটি নিউরন যা ঘুমের চক্র এবং স্থূলতার সঙ্গে জড়িত। এই গবেষণায় আরও কী কী বিষয় বেরিয়ে এসেছে এবং কীভাবে দূষণ শুক্রাণুর সংখ্যা কমায়, আসুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
যা ঘটেছে এই গবেষণায়
মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন যে বায়ু দূষণ মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস করে। অতীতে, অনেক গবেষণায় এটি পরিষ্কার হয়েছে যে একজন ব্যক্তি যদি মানসিক চাপে থাকেন তবে এটি প্রজনন এবং শুক্রাণুকে প্রভাবিত করে। শুধু তাই নয়, মানসিক চাপ মহিলাদের মাসিক চক্রকেও প্রভাবিত করে। তবে, এই গবেষণাটি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছে যে কীভাবে দূষিত বাতাসে শ্বাস নেওয়া উর্বরতাকে দুর্বল করতে পারে।
ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে
মস্তিষ্ক এবং যৌন অঙ্গের মধ্যে সরাসরি যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার পর, গবেষকরা পরীক্ষা করেছেন যে বায়ু দূষণ আসলে মস্তিষ্কে প্রদাহ বাড়ায় কিনা। এ জন্য তিনি দুটি ইঁদুরকে পরিষ্কার বাতাস ও দূষিত বাতাসে রেখেছিলেন। এর পরে দেখা গেছে যে বায়ু দূষণের কারণে তাদের মধ্যে একটি বিশেষ ধরণের নিউরন তৈরি হয়, যা ঘুমের চক্র এবং স্থূলতার সঙ্গে জড়িত। এতে তার শুক্রাণুর প্রভাব পড়ে। এই নিউরনগুলি সাধারণত হাইপোথ্যালামাসে পাওয়া যায়, মস্তিষ্কের একটি অংশ যা ক্ষুধা, তৃষ্ণা এবং যৌন ড্রাইভ নিয়ন্ত্রণ করে। হাইপোথ্যালামাস মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থির সঙ্গেও কাজ করে। এটি সেই হরমোন তৈরি করে যা সরাসরি প্রজনন অঙ্গকে প্রভাবিত করে। সামগ্রিকভাবে, এটা স্পষ্ট যে হাইপোথ্যালামাসে পাওয়া নিউরনগুলি শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস করার প্রধান কারণ।
এটাও একটা কারণ
বায়ু দূষণের কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়ার পিছনে দুটি প্রধান কারণ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দূষিত বাতাসে রয়েছে বিপজ্জনক উপাদান যেমন পার্টিকুলেট ম্যাটার, ওজোন, সালফার ডাই অক্সাইড। এটি জৈব যৌগের সংস্পর্শে এসে উর্বরতাকে দুর্বল করে। এ কারণে শুক্রাণুর মানও নষ্ট হয়। দূষিত বাতাসে ডাইঅক্সিন উপাদানও থাকে। শুক্রাণুও এর দ্বারা প্রভাবিত হয়।
এই সতর্কতা অবলম্বন করুন
শীতকালে দূষণের সমস্যা বেশি হয়। এ সময় আকাশে ধোঁয়াশাও তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে এই মৌসুমে অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন।
এই মৌসুমে সকাল-সন্ধ্যা হাঁটা বন্ধ করুন।
জনপরিবহন ব্যবহার করুন।
বেশি করে জল পান করুন, ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি বেশি করে খান।
সর্দি-কাশি দেখলে ডাক্তার দেখান।
এই ঋতুতে ঘুমের প্রভাব বা স্থূলতা বাড়তে দেখা গেলেও চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
No comments:
Post a Comment