উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম কালি মন্দির বলে পরিচিত ডাকাত কালি মন্দির।ডাকাত কালিবাড়ি বলেই পরিচিত।ডাকাত কালি নামটা শুনলেই কেমন গা ছমছম করে ওঠে,হ্যাঁ ঠিকই গা ছমছম করার মতই এই মন্দিরের ইতিহাস।
এই মন্দিদের সাথে রঘু ডাকাতের নাম যে জড়িয়ে আছে।আনুমানিক ৫০০ বছর ধরে এই ডাকাত কালিবাড়ি অবস্থান করছে।স্থানীয় সূত্রে অর্থাৎ মন্দিরের সাথে যুক্ত আছে বর্তমানে তাদের কথা অনুযায়ী রঘু ডাকাতের একমাত্র আস্থানা ছিল এই বটগাছতলা।ডাকাতি করে রঘু ডাকাত এখানেই আসতো,আবার কোথাও ডাকাতি করতে যাওয়ার আগেও এখানে মা কালির কাছে মানত করে বের হত।
বর্তমানে মন্দির বলতে একটি বটগাছ,সেই বটগাছের গোড়াটাই পুজো করা হয়।এখানে কোন প্রতিমা নেই,মন্দিরের ভিতরে কোন পুরোহিত প্রবেশ করতে পারবে না। পুজো করতে হলে,মন্দিরে বাইরে প্রতিমা রেখে পুজো করতে হবে।এবং সেইমত প্রতি অমাবস্যায় পুজো হয় এবং কালিপুজোর দিন সারারাত ধরে পুজো হয় মা কালির।
মন্দিরটি ছাদ বটগাছে শিকর ঝুড়ি দিয়ে ধরে রেখেছে,আম্ফান,ইয়াস কত ঘূর্ণিঝড় সাম্প্রতিক কালে হয়ে গেল কিন্তু মন্দিরে ছাদ বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি।স্থানীয় মানুষের কথা অনুযায়ী মন্দিরে প্রবেশ পথেই মায়ের দুটি পা রয়েছে,বটগাছে ঝুরি নেমে এমন ভাবে রয়েছে দেখে তেমনটাই মনে হবে।
ভিতরে একটি লাইট রয়েছে,আর মানসিক করা অসংখ্য সুতো দিয়ে কিছু গিট বেধে যাওয়া কাপড়,কাগজের টুকরো।কালি পুজোর দিনগুলি দূর দুরান্ত আসে এই ডাকাত কালিবাড়িতে মানুষ।অনেকেই মানসিক করে যায়,তাদের মনোবাসনা পূর্ণ হলে আবার পুজো দিয়ে যায়।
একসময় রঘু ডাকাতে এই আস্থানা,ডাকাত কালিবাড়ি এলাকা দিয়ে বিকেলের পর থেকে কেউ যাতায়াত করতো না ভয়ে,আসতে আসতে সব ভয় ভুলে বর্তমানে জাগ্রত মা কালির মন্দির।যেখানে মানসিক করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয় বলে দাবি।এখন এই ডাকাত কালিবাড়ি একটি দর্শনীয় স্থান।
অনেকেই আসে ফটোসেশান করতে,তেমনি এক ঘটনার সাক্ষি আমরাও,ডাকাত কালিবাড়ি গিয়ে দেখা গেল এক খুদে কালি সেজে ফটো তুলছে,মানে একটি কন্যা সন্তান তার পরিবারের সাথে এসেছে ফটোসেশান করতে।
তাকে সাজানো হয়েছে মা কালির মত করে,যদিও এটা নতুন নয়,প্রায়দিনই এখানে এমন ফটোসেশান চলে বলে জানা যায়।এই মন্দির কারোর নিজস্ব সম্পত্তি নয়,এলাকার বসবাসকারী মানুষরাই মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ করে,তাই এই মন্দিরে যে কেউ অবাধে আসতে পারে।
এর জন্য আলাদা করে কোন অনুমতি প্রয়োজন হয়না।শুধুমাত্র কোন পুরোহিত মন্দিরের ভিতরে পুজো করতে পারবে না।বাইরে একটি মন্দির রয়েছে,যেখানে একটি শিবলিঙ্গ আছে,সেখানে প্রতিমা এনে পুজো করতে পারে।এই নিয়মেই বছরের পর বছর পুজো হয়ে আসছে এই ভাবেই।
No comments:
Post a Comment