নিজস্ব প্রতিবেদন: মধ্য রাতে খাবার চেয়েছিলেন মা, মায়ের আদেশ মেনেই কায়স্থ হয়েও সেই রাতে উঠে ঘরের কোণে রাখা দুধ ও চাল দিয়ে পরমান্ন রেঁধে মাকে খেতে দিয়েছিলেন পরিবারের এক সদস্য। সেই সময় থেকেই ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের পরিবারে শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা, যা এখনও পুরনো নিয়ম-নীতি মেনেই হয়ে আসছে।
তৃণমূল সাংসদ তথা ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার জানান, তারা বরিশালের মানুষ, যদিও দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই তারা এপার বাংলায় চলে আসেন। নেত্রী জানান, বরিশালের গাভা গ্ৰাম, যেখানে সব ঘোষ দস্তিদাররা বাস করতেন। প্রায় ৩১৫ থেকে ৩২০ বছর আগে কালিপ্রসন্ন ঘোষ দস্তিদারকে মা দুর্গা স্বপ্নাদেশ দেন। মা দুর্গা তাঁর স্বপ্নে এসে বলেন, 'ক্ষিদে পেয়েছে খেতে দে।' কালিপ্রসন্ন বাবু বলেন, তিনি কায়স্থ হয়ে কীভাবে মাকে খেতে দেবেন! তখন মা নির্দেশ দেন দুধে চাল ফুটিয়ে পরমান্ন রেঁধে খাওয়াতে। সেইমতই তা নিবেদন করা হয় মাকে।
কাকলি দেবী এও বলেন, এই পরমান্ন বা পায়েস একটু ভিন্ন ধরনের হয়, এটা অনেকটাই পাতলা এবং এর নাম চড়ু। সেই তখন থেকে শুরু করে আজও একই নিয়মে পুজো হয়ে আসছে। দেশ ভাগের সময় এপার বাংলায় এসে হাওড়ার বাউরিয়াতে সব ঘোষ দস্তিদাররা বাস করতেন একসঙ্গে পুজো করতেন। কিন্তু তাঁর স্বামী ডঃ সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার ডাক্তার হওয়ার পর থেকে তিনি পুজো আলাদা করে নেন এবং মধ্যমগ্রাম বাদু রোডে নিজেদের বাসভবনে ঐ একই নিয়ম মেনে আজও দুর্গা পূজা হয়।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী চড়ু ও অন্ন ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে। পাশাপাশি সকল নিয়ম নিষ্ঠা মেনেই মায়ের পুজো হয়। নেত্রী এও জানান, এতদিন তিনি পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের একমাত্র বৌমা ছিলেন। তবে সম্প্রতি নিজের ছোট ছেলের বিয়ে দিয়েছেন সাংসদ। ছোট বৌমাও পুজোর কাজে হাত লাগান এবং পুজোর এই কটা দিন পরিবারের সকলে মিলে হাসি আনন্দে কেটে যায় বলেই সাংসদ জানান।
সাংসদের ছোট বৌমা দিশারী ঘোষ দস্তিদার বলেন, শ্বশুর বাড়ির এই পুজোতে খুব আনন্দ করেই তারা কাটান। তিনিও সাংসদ শাশুড়ি মায়ের কাছ থেকে পুজোর নিয়ম-নীতি সব শিখে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, তার বাবার বাড়ির লোকজনেরাও এই পুজোতে আমন্ত্রিত। কোভিড বিধি মেনেই সকলে পুজোয় অংশ নেবেন তারাও। দিশারী দেবী এও বলেন, পুজোর এই চারদিন কোনও প্যান্ডেল হুপিং নয়, শ্বশুর বাড়ির পুজোতেই আনন্দ করে কাটাবেন।
No comments:
Post a Comment