প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক: বড়সড় বিপদে পড়তে পারেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সোনু সুদ। আয়কর বিভাগ সোনুর ওপর ২০ কোটি টাকা কর চুরির এবং তার চ্যারিটি ট্রাস্ট দ্বারা বিদেশি চাঁদা অধিনিয়ম অ্যাক্ট লঙ্ঘন করার অভিযোগ তুলেছে। অর্থাৎ আগামী দিনে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং সিবিআই সহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এফসিআরএ বিভাগের তদন্তও শুরু হতে পারে সোনু সুদের উপর। আয়কর দফতর থেকে জারি করা বিবৃতিতে লক্ষ্ণৌ-ভিত্তিক একটি কোম্পানিতেও তল্লাসি অভিযানের কথা বলা হয়, যা অভিনেতার সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে সোনু সুদের পক্ষ থেকে জবাবের অপেক্ষা রয়েছে।
আয়কর দফতরের দেওয়া সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অতীতে অভিনেতা সোনু সুদের বিভিন্ন ঠিকানায় আয়কর দফতর অভিযান চালায়। আয়কর বিভাগের কাছে খবর আসে যে, অভিনেতা সোনু সুদ তার আয় সম্পর্কে আয়কর দফতরকে যে তথ্য দিচ্ছেন, তা যথেষ্ট সন্দেহজনক। যখন আয়কর বিভাগ সোনু সুদের ঠিকানায় অভিযান চালায়, তখন তদন্তের সময় এমন অনেক নথি পাওয়া যায়, যা প্রমাণ সোনু সুদ ব্যাপক হারে আয়কর ফাঁকি দিয়েছিলেন।
আয়কর দফতরের মতে, চলচ্চিত্র জগৎ থেকে সোনু সুদ যে অর্থ পেতেন, তার মধ্যে তিনি তার আয় না দেখিয়ে অনেক ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে ইনসিকিওর্ড লোন দেখিয়েছেন। আয়কর দফতরের দাবী, তদন্তে এখন পর্যন্ত এমন ২০ টি কোম্পানি পাওয়া গিয়েছে, যেখান থেকে সোনু ইনসিকিওর্ড লোন দেখিয়েছিলেন যদিও এই টাকা তাঁর নিজের উপার্জনের ছিল। আয়কর দফতরের পদস্থ আধিকারিকের মতে, যখন এই শেল কোম্পানিগুলির কর্তাধর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, তারা হলফনামার মাধ্যমে স্বীকার করেছিল যে তারা সোনু সুদকে ভুয়া এন্ট্রি দিয়েছে। আয়কর দফতরের আধিকারিকের দাবী অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২০ কোটি টাকার বেশি আয়কর ফাঁকি ধরা পড়েছে।
আয়কর দপ্তরের দেওয়া সরকারি তথ্য অনুসারে, সোনু সুদ ২ জুলাই ২০২০ তারিখে তার চ্যারিটি ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন এবং এই ট্রাস্টে ১৮ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা এসেছিল। এর মধ্যে ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা বিভিন্ন ধর্মীয় কাজে ব্যয় করা হয়েছিল। যদিও ১৭ কোটি টাকা এখনও এই ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে আছে। আয়কর দফতরের মতে, এই অ্যাকাউন্টের নথিপত্র যাচাই -বাছাই করার সময় দেখা গেছে যে সোনু সুদের চ্যারিটি ট্রাস্ট বিদেশ থেকেও দুই কোটি, ১ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছে।
তদন্ত চলাকালীন আরও দেখা গেছে যে, এই অনুদান সংগ্রহে বিদেশি চাঁদা অধিনিয়ম অ্যাক্ট লঙ্ঘন করা হয়েছে। আয়কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযানের সময় উদ্ধার হওয়া নথি এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলির তদন্তের কাজ চলছে। সূত্র বলছে, আয়কর দপ্তরের আনুষ্ঠানিক প্রকাশের পর এখন অভিনেতা সোনু সুদ আরও ঝামেলায় পড়তে পারেন। কারণ তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটসহ অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হতে পারে। অর্থাৎ সোনু সুদের জন্য আগামী দিনগুলো কঠিনতর হয়ে উঠতে পারে। এই মামলার তদন্ত চলছে আয়কর দফতরের তরফে।
আয়কর দফতর থেকে জারি করা সরকারি বিবৃতিতে লক্ষ্ণৌয়ের একটি ইনফ্রা কোম্পানিতেও অভিযানের কথা বলা হয়েছে। আয়কর দফতরের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মুম্বাইয়ের জনপ্রিয় অভিনেতা সোনু সুদেরও এই কোম্পানিতে কথিত অংশীদারিত্ব রয়েছে এবং এই কোম্পানি দ্বারা আয়কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। আয়কর বিভাগের মতে, দিল্লী, জয়পুর, লক্ষ্ণৌ এবং গুরুগ্রামে অবস্থিত এই কোম্পানির লোকেশনে অভিযান চালানো হয়েছিল এবং অভিযানের সময় এক কোটি ৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। আয়কর বিভাগ এই কোম্পানির ১৭৫ কোটি টাকার কথিত লেনদেন নিয়েও সন্দেহ করছে। এই মামলার তদন্তও চলছে এবং বলা হচ্ছে যে এই কোম্পানিটিও সোনু সুদের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে সোনু সুদের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
No comments:
Post a Comment