প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক: ইন্দিরা গান্ধী দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হন। ইন্দিরা তার পিতা পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর কাছ থেকে রাজনীতির কৌশল শিখেছিলেন। পণ্ডিত নেহেরুর ছায়ায় তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। কিন্তু ইন্দিরা রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর, তার স্বামী ফিরোজ গান্ধীর সাথে তার সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। একটা সময় তো এমনও হয়েছিল যে ইন্দিরা গান্ধী লক্ষ্নৌ থেকে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে এলাহাবাদে তার মাতৃগৃহে চলে আসেন।
পুপুল জয়কর তার 'ইন্দিরা গান্ধী: এ বায়োগ্রাফি' বইতে এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন। পুপুল লিখেছেন, এলাহাবাদে আসার পর ইন্দিরা তার বাবাকে তার কাজ সামলাতে সাহায্য করতে শুরু করেন। অন্যদিকে, ফিরোজ 'ন্যাশনাল হেরাল্ড' পত্রিকার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। ধীরে ধীরে দুজনের সম্পর্ক দুর্বল হতে থাকে। ১৯৫৯ সালে, যখন ইন্দিরার নাম কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করা হয়, তখন ফিরোজ মনে করেন এটিই তার বিবাহিত জীবনে শেষ আঘাত।
ফিরোজ গান্ধী সম্পূর্ণ একা অনুভব করতে শুরু করেছিলেন। পুপুল লিখেছিলেন, তিনি নিজেকে একপ্রকার গ্রৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়া-আসাও বন্ধ করে দেন। ইন্দিরা কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। ইন্দিরার বাবা পণ্ডিত নেহেরু সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নেহরু এবং ফিরোজের সম্পর্ক শুরু থেকেই বিশেষ ভালো ছিল না। এমনকি নেহেরু চেয়েছিলেন যে ইন্দিরা এবং ফিরোজের বিয়েটাও না হোক। ফিরোজও একজন কংগ্রেস নেতা ছিলেন এবং নেহরু তাকে আগে থেকেই চিনতেন।
ফিরোজ গান্ধী ১৯৬০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মারা যান। এর পর ইন্দিরা গান্ধী একেবারে ভেঙে পড়েন। তিনি ফিরোজের সঙ্গ পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। কারণ ফিরোজই ছিলেন, যিনি মায়ের মৃত্যুর পর ইন্দিরাকে সমর্থন করেছিলেন এবং তিনি প্রতিটি সময় তাঁর পাশে দাঁড়াতেন। ফিরোজের শেষ যাত্রায় জনতার উপচে পড়া ভিড় দেখে নেহরুও অবাক হয়েছিলেন।
ফিরোজের মৃত্যুর পর, ইন্দিরা একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, "এটা কি অদ্ভুত নয় যে যখন আপনি পরিপূর্ণ থাকেন তখন আপনি বাতাসের মতো হালকা বোধ করেন এবং যখন আপনি শূন্য হয়ে যান, তখন হতাশা আপনাকে ঘিরে রাখে।" এর পর তিনি প্রায়ই ফিরোজের কথা মনে করতেন। ফিরোজের মৃত্যুর ছয় বছর পর তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন।
No comments:
Post a Comment