রাজা নেই রাজ্য নেই তবে পুজো আছে - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 16 September 2021

রাজা নেই রাজ্য নেই তবে পুজো আছে


বিশেষ প্রতিবেদন: কাশিমবাজার রাজবাড়িমুর্শিদাবাদের বনেদিবাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম কাশিমবাজারের ছোট রাজবাড়ির পুজো। সেই রাজাও নেই, নেই সেই রাজ্যপাট। তবে রয়ে গেছে ঐতিহ্য ও পরম্পরা। সেই ঐতিহ্যই বাঁচিয়ে রেখেছে কাশিমবাজারের রায় বাড়ির পুজোকে।


১৭৪০ সালে রেশমের ব্যবসায়ী দীনবন্ধু রায় অধুনা বাংলাদেশের পিরজপুর থেকে ব্যবসার জন্য এসেছিলেন কাশিমবাজারে। পরে এই কাশিমবাজারেই বসবাস করতে আরম্ভ করেন তিনি। ব্রিটিশ সরকার দীনবন্ধু রায়কে রেশম কুটিরের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করে। ব্রিটিশ সরকারের আনুকূল্যে ফুলে ফেঁপে ওঠে সেই ব্যবসা। ১৭৯৩ সালে, ব্রিটিশ সরকার রায় পরিবারকে জমিদারির স্বত্ব দেয়। মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজারের ছোট রাজবাড়িতে তার পর থেকেই শুরু হয় দুর্গাপুজো। 


এ বাড়ির উত্তরসূরিরা এখন শহর নিবাসী। কিন্তু বছরের এই সময়টা জেগে ওঠে সারা বছর অবহেলায় পড়ে থাকা এই জমিদার বাড়ি। রায়বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম, প্রশান্ত রায়ের তত্ত্বাবধানে সাজসাজ রব পড়ে যায় এই কটা দিন। প্রশান্ত রায়, তাঁর স্ত্রী সুপ্রিয়া রায় ও সন্তানদের নিয়ে এই রাজবাড়িতেই পুজো কাটান।


রথের দিন কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে এখানে পুজোর সূচনা হয়। ওইদিনই প্রতিমা তৈরির কাজে হাত দেন শিল্পীরা। চতুর্দশির দিন প্রতিমার গায়ে রং লাগে। মহালয়ার দিন বেদিতে তোলা হয় মাকে। শুক্লা পঞ্চমী থেকে প্রতিপদ পর্যন্ত ছ’জন পুরোহিত পুজো করেন। ষষ্ঠীর দিন আমন্ত্রন, অধিবাস ও বোধন হয়। সপ্তমীর দিন সকালে নবপত্রিকা গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে স্নান করানো হয়। প্রাচীন ঐতিহ্য মেনেই সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও সন্ধি পুজো হয়। প্রাচীন নীতি মেনে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত, তিনদিন এখানে কুমারী পুজো হয়, যা রাজবাড়ির মহিলারা করেন। দশমীর দিন হয় অপরাজিতাপুজো। আগে এই পুজোতে বলি হলেও এখন আর বলি হয় না। এখন মাছ-মিষ্টি নিবেদন করা হয় মা দুর্গাকে। 


আগে আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পাত পেড়ে খেয়ে যেতেন এই রাজবাড়িতে। কিছু বছর আগেও এখানে নীলকণ্ঠপাখি ওড়ানো হত। কিন্তু কালের নিয়মে সেসব এখন অতীত।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad