সুদেষ্ণা গোস্বামী: কালনা যে ক্রমে ক্রমে মন্দির নগরী হয়ে উঠেছিল তাতে বর্ধমান রাজ পরিবারের অবদান যথেষ্ট। তাদের হাত ধরেই অষ্টাদশ শতকের প্রথম থেকে ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত শতাধিক বৎসর ব্যাপী চলেছিল এই কাজ। শ্রাবণ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে মহিষমর্দিনী মহাসপ্তমীর পুজোও বলিদান শুরু হয়।
সপ্তমী বিহিত পূজা আরম্ভ হয় সকাল সাতটা নাগাদ। সাথে হয় চণ্ডীপাঠ। তারপর হয় বলিদান। তারপর মায়ের ভোগ আরতি। চোখ জুড়ানো দেবীমূর্তি দেখে আপনার মন ভরে উঠবে। আশ্বিনের দুর্গা পুজোর সঙ্গে শ্রাবণ মাসের এই মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তির তফাৎ হল এখানে দশপ্রহরণধারিনী দুর্গা মা সিংহবাহিনী অসুর নিধন করছে। কিন্তু দুপাশে লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক ,সরস্বতী নেই। সে জায়গায় স্থান নিয়েছে চামর ব্যঞ্জনররতা জয়া, বিজয়া।
ঢাকের সাজে মা হয়ে ওঠেন সুন্দরী। আর কত যে অলংকার গায়ে পরানো আছে কি বলবো। গণেশের সাথে সাথে কলা বউ না থাকায় হয় না সন্ধিপুজো। অম্বিকা কালনাকে বলা হয় তীর্থ নগরী। এই শহরের জাগ্রতা দেবী হলেন মহিষমর্দিনী। এখানে কবে কিভাবে পূজা শুরু হয়েছিল তা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে।
বিকেল চারটা থেকে প্রতিদিন সপ্তমী থেকে দশমী প্রচুর মানুষের ঢালাও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। সন্ধ্যা আরতির পর প্রতিদিন আটচালায় হয় যাত্রা ,কবি গান ,কীর্তন, বাউল গান, নিত্য ,আলেখ্য, লোকগীতি, ভক্তিগীতির মতো অনুষ্ঠান পুরোপুরি ঐতিহ্যকে অটুট রেখেছে খুলনার মা দুর্গা।
No comments:
Post a Comment