প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক : লেবু একটি ছোট ভিটামিন সি ফল কিন্তু এর উপকারিতা মোটেও ছোট নয়। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কয়েক ফোঁটা লেবু কুসুম গরম জলে মিশিয়ে খান, তাহলে আপনি কিছুদিনের মধ্যেই অকল্পনীয় উপকার পাবেন।
আসুন জেনে নেই সকালে লেবু জল খাওয়ার উপকারিতা: -
ওজন কমাতে সাহায্য করে
আপনি যদি ডায়েটিং করার কথা ভাবছেন, তাহলে আপনাকে আপনার সেরা বন্ধু হিসেবে লেবু জল বেছে নিতে হবে। লেবুতে রয়েছে পলিফেনল, যা খাবার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আপনার যদি সকালে কমলার রস খাওয়ার অভ্যাস থাকে তবে এর পরিবর্তে লেবুর জল খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ কমলার রসে ক্যালোরি থাকে তাই আপনার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। ৮-১২ আউন্স স্বাভাবিক বা ঠান্ডা জলে একটি সম্পূর্ণ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তবে ওজন কমানোর জন্য ঠান্ডা লেবুর জল বেশি কার্যকর।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
যেকোন টক ফল, যেমন লেবুতে ভিটামিন সি থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। লেবুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা জীবাণুগুলির দেহে বসতি স্থাপন করা সহজ করে তোলে। তাই কোনো ধরনের সংক্রমণ বা অসুস্থতা এড়াতে লেবুর বিকল্প নেই। লেবুর খোসায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, পেকটিন, ফাইবার এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ যা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
শরীর হাইড্রেটেড থাকবে
লেবুর গুণ আপনাকে সরাসরি হাইড্রেটেড রাখবে না। তবে এক্ষেত্রে লেবুর স্বাদ অনন্য ভূমিকা পালন করবে। শরীরে জলের নিখুঁত ভারসাম্য বজায় রাখতে আপনাকে সারা দিন প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে। জলের স্বাদ না থাকায় বারবার খাওয়ার তাগিদ কাজ নাও করতে পারে। সেক্ষেত্রে লেবুর পানি পান করলে স্বাদও থাকবে এবং হাইড্রেটেড থাকবে। যদিও আপনার শরীরে প্রতিদিন ৮ গ্লাস জলের প্রয়োজন, এই প্রয়োজন অনেক কিছুর উপর ভিত্তি করে কমবেশি হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার ওজন, কাজের চাপ, চাহিদা এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে আপনার শরীরে জলের পরিমাণ পরিমিত বলে বিবেচিত হবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
লেবুর জলে থাকা এসিড খাবার হজমে সাহায্য করে। এতে রয়েছে সাইট্রাস ফ্ল্যাভোনয়েড যা পেটের খাবার ভেঙ্গে দেয় এবং সহজে হজম হয়। বয়সের সাথে সাথে হজম ক্ষমতা কমে যায়। আপনি জলের সাথে কয়েক টুকরো লেবু বা চূর্ণ লেবুর খোসা মিশিয়ে পেকটিনের গুণমানও পেতে পারেন। পেকটিন হল মসুর ডালে পাওয়া এক ধরনের ফাইবার। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ফাইবার খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি লেবুর জল না খেলেও আপনি লেবুর টুকরো বা লেবুর খোসার জল খেলে উপকার পাবেন।
বয়স ধরে রাখে
এখানেও ভিটামিন সি! গবেষকদের মতে, ভিটামিন সি বলিরেখার সম্ভাবনা অনেক কমিয়ে দেয়। ভিটামিন সি -তে রয়েছে কোলাজেন যা ত্বককে রক্ষা করতে কাজ করে।
লিভারকে সচল রাখে
লিভার আপনার শরীরে ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। লেবু সাইট্রাস ফ্ল্যাভোনয়েডস: লিভার থেকে বর্জ্য অপসারণ এবং লিভারের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই লিভার সুস্থ রাখতে লেবুর জল খুবই উপকারী।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানেও লেবুর জল দারুণ কাজ করে। সকালে উঠে খালি পেটে হালকা গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। যদি গরম জলের সাথে শুধু লেবুর রস পান করা খারাপ হয়, তাহলে আপনি এটি মধু এবং সামান্য লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। এই সূত্রটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অবিশ্বাস্যভাবে ভাল কাজ করে। তাই আপনি যদি সকালে উঠে লেবু জল গিলেন, তাহলে আপনার পেট অবশ্যই পরিষ্কার থাকবে।
পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়ায়
সাধারণত যখন আমরা পটাশিয়ামের কথা বলি, প্রথমেই মনে আসে কলা এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল। কিন্তু লেবু থেকে পর্যাপ্ত পটাসিয়াম পাওয়াও সম্ভব। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে। তাই আপনার শরীরের পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে হবে। যেহেতু লেবুতে পটাশিয়াম থাকে, তাই দিনের শুরুতে লেবুর জল পান করলে পটাশিয়ামের জন্য আপনার শরীরের কিছু চাহিদা পূরণ করতে পারে।
দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে না
লেবুতে থাকা সাইট্রাস সহজেই মুখে ব্যাকটেরিয়ার সম্ভাবনা রোধ করে। এবং তাই কোন খারাপ শ্বাস আছে। যাইহোক, সাইট্রিক অ্যাসিডের অতিরিক্ত পরিমাণ দাঁতের এনামেলের ক্ষতি করতে পারে। তাই আপনি মাঝে মাঝে খড়ের সাথে লেবুর জল পান করতে পারেন।
গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্য উপকারী
গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ভ্রূণের চাহিদাও পূরণ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লেবুর জলে রয়েছে ভিটামিন সি যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন ক্ষতিকর ভাইরাস ধ্বংস করে এবং হাড়ের টিস্যুকেও শক্তিশালী রাখে। আর গর্ভস্থ শিশুটি যে কোনো ধরনের রোগ-জীবাণু থেকে মুক্ত থাকবে।
No comments:
Post a Comment