প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক : আফগানিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দ, তার দুই উপপ্রধানমন্ত্রীসহ তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারের কমপক্ষে ১৪ জন সদস্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ব্ল্যাক লিস্টে রয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বৈশ্বিক সন্ত্রাসী ঘোষিত সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে তত্ত্বাবধায়ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে। শরণার্থী বিষয়ক তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রী হিসেবে সিরাজউদ্দিন হাক্কানির কাকা খলিল হাক্কানির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সিরাজউদ্দিনের মাথায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী মল্লা ইয়াকুব, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোল্লা আমির খান মুত্তাকি, উপ -পররাষ্ট্রমন্ত্রী শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানিকজাই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ১৯৮৮ নিষেধাজ্ঞা কমিটির অধীনে তালিকাভুক্ত। এটি তালেবান নিষেধাজ্ঞা কমিটি নামেও পরিচিত। বিবিসি উর্দু জানিয়েছে, "তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কমপক্ষে ১৪ জন সদস্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ব্ল্যাক লিস্টে রয়েছে।"
আফগানিস্তানের-সদস্যের মন্ত্রিসভায় এমন চারজন নেতা রয়েছেন যারা 'তালেবান ফাইভ'-এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাদেরকে গুয়ান্তানামো কারাগারে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে রয়েছে মোল্লা মোহাম্মদ ফাজিল (উপ -প্রতিরক্ষামন্ত্রী), খায়রুল্লাহ খায়রখাওয়া (তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী), মোল্লা নূরুল্লাহ নূরী (সীমান্ত ও উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী) এবং মোল্লা আবদুল হক ওয়াসিক (গোয়েন্দা পরিচালক)। এই গোষ্ঠীর পঞ্চম সদস্য মোহাম্মদ নবী উমরি সম্প্রতি পূর্ব খোস্ত প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন।
২০১৪ সালে ওবামা প্রশাসন 'তালেবান ফাইভ' নেতাকে ছেড়ে দেয়। ফাজিল এবং নূরীর বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে শিয়া হাজারা, তাজিক এবং উজবেক সম্প্রদায়ের গণহত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তালেবান একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যা আফগানিস্তানের জটিল জাতিগত গঠনকে প্রতিফলিত করে, কিন্তু মন্ত্রিসভায় কোনও হাজারা সদস্য নেই। মঙ্গলবার ঘোষিত সকল মন্ত্রী ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত তালেবান নেতা যারা ২০০১ সাল থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভায় কোনও নারীও স্থান পাননি।
তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসানকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রতিবেদনে তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি শক্তিশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা রেহবাড়ি সুরার প্রধান। উভয় উপ -প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গনি বড়দার এবং আলেম আব্দুল সালাক হানাফিও জাতিসংঘের ব্ল্যাক লিস্টে রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল হামিদ গত সপ্তাহে কাবুলে অঘোষিত সফরের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণা আসে। হাক্কানি নেটওয়ার্কের শীর্ষ নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা, যাদের আইএসআই -এর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়। তারা পাকিস্তানের, বিশেষ করে তার গোয়েন্দা সংস্থার তালেবানের ওপর প্রভাবের লক্ষণ।
No comments:
Post a Comment