প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়ন। যোগীপাড়া ইউনিয়নের শেষ প্রান্তের একটি গ্রাম বীরকুৎসা। জমিদারী প্রথা বিলোপ হবার পূর্বে বীরকুৎসা ছিলো একটি পরগনা। বীরকুৎসা পরগনার জমিদার ছিলেন ভারতের কাশী থেকে আসা বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বীরু বাবু। বীরকুৎসা পার্শবর্তী নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আমরুল ডিহি বিশার রাজা ছিলেন গোপাল ধাম। প্রভাতী বালা নামে এক রুপসী কন্যা ছিলো রাজা গোপাল ধামের। রাজা গোপাল ধাম রাজকন্যা প্রভাতী বালা এবং রাজ জামাতা বীরেশ্বর বন্দোপাধ্যায়ের নামে বীরকুৎসা পরগনা লিখে দেন।
রাজকন্যা প্রভাতী বালা ছিলেন শৌখিন এবং রুচিশীল মানুষ। স্ত্রীর পছন্দ অনুযায়ী বীরু বাবু বীরকুৎসায় পঞ্চাশ বিঘা জমির উপর গড়ে তোলেন একটি দ্বিতল নয়নাভিরাম অট্টালিকা। এই অট্টালিকায় সেগুন কাঠের কারুকাজে পূর্ণ হাজারটি দুয়ার নির্মাণ করা হয়। আর এই কারণেই এটি হাজার দুয়ারী জমিদার বাড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।
হাজার দুয়ারী অট্টালিকার ভেতরে এক পাশে ছিলো জলসাঘর। যেখানে গানের আসর বসত। কোলকাতা থেকে ভোলানাথ অপেরা এসে গান, বাজনা করত। পুবদিকের দেউরির পাশে ছয়জন করে, বারে জন বরকান্দাজ থাকত। তার পাশে ছিলো মালখানা। এর কিছুু দূরে ছিলো মাহাফেজখানা। বকুল তলার পাশে ছিলো খাজনা আদায়ের ঘর, যা এখন তফসিল অফিস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এর পাশে স্হাপন করা হয়েছে পোস্ট অফিস। প্রাসাদের পূর্বের দেউরি পার হয়ে সামনে আরেকটা বড় পুকুর ছিল। সেই পুকুরে গোসল করত আমলা, পেয়াদা ও বরকন্দাজরা। সুবিশাল অট্টালিকা বিপুল সম্পদ ও জমিজমা রেখে বীরু বাবুর পরিবার ১৯৫০ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার চন্দননগরে চলে যান বলে জানা যায়।
আলোকচিত্রী Abdullah Kafi ' র তোলা ছবিতে ঐতিহাসিক হাজার দুয়ারী জমিদার বাড়ী।
কাজী নূরের ফেসবুক ওয়াল থেকে ছবি ও প্রতিবেদনটি নেওয়া।
No comments:
Post a Comment