প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক : স্মার্টফোনের চার্জ নিয়ে কমবেশি সবাইকেই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। কেউ বাইরে বের হলে বারবার চেক করেন মোবাইলে পর্যাপ্ত চার্জ আছে কিনা। নতুবা কাজের মাঝে হঠাৎ ফোন বন্ধ হয়ে গেলে বিপদ। ফোনের চার্জ ধরে রাখার জন্য স্মার্টফোন কোম্পানিগুলোও প্রতিযোগিতায় মেতেছে। তারা নিত্যনতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছে।
আধুনিক প্রযুক্তির কারণে মোবাইল চার্জ, কয়েক মিনিটে ফুল চার্জ, সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে চার্জ, আরেক মোবাইলের সংস্পর্শে চার্জিং ইত্যাদি সবই সম্ভব হয়েছে। সামনে আরো এমন কিছু প্রযুক্তি আসছে যা এতোদিন মানুষের কল্পনাতে ছিল। অথচ একটা সময় একবার স্মার্টফোন চার্জ হতে ৪-৬ ঘণ্টা লেগে যেত। স্মার্টফোনের আধুনিক কিছু প্রযুক্তি হল:
লিথিয়াম-আয়ন স্মার্টফোন চার্জার:
গবেষকেরা বলেছেন, অধিকাংশ মোবাইল ফোন ও ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিকস ডিভাইসে লিথিয়াম আয়ন রিচার্জেবল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ স্মার্টফোন কোম্পানি এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। সেলফোন স্মার্টফোনে রূপান্তরিত হওয়ার সাথে সাথে এর ব্যাটারিও ধীরে ধীরে পোর্টেবল হওয়া শুরু করে। একসময় ওয়াল চার্জার ছিল ক্লাসিক সেলফোন চার্জার। সে অবস্থা এখন আর নেই। এককথায়, সেলফোন চার্জার ও ব্যাটারি যতোটা সংকুচিত হয়েছে চার্জিং সময়ও আনুপাতিক হারে কমেছে।
ইউএসবি ক্যাবল :
লিথিয়াম বা ওয়াল চার্জারের পর চার্জিংয়ের পরবর্তী প্রযুক্তির নাম ইউএসবি ক্যাবল। এর মাধ্যমে একসাথে ডাটা ট্রান্সফার করাও সম্ভব। নব্বই দশকের পর দ্রুত ও কার্যকরি এ প্রযুক্তি বাজারে আসে। অ্যাম্পারেজ ক্যাবল নির্বাচনের ওপর নির্ভর করে একবার ফোন চার্জ হতে কত সময় লাগবে। তবে এর গড় চার্জিং সময় হচ্ছে প্রায় ৩ ঘণ্টা। প্রকৃতপক্ষে, ওয়াল চার্জারের চেয়ে ইউএসবি ক্যাবল চারগুণ বেশি মন্থর কিন্তু এটি আকৃতি ও কানেক্টিভিটির দিক থেকে বিশ্বব্যাপী বৈচিত্র্য নিয়ে আসে।
ওয়্যারলেস চার্জিং:
মাত্র কয়েক বছর আগে ওয়্যারলেস চার্জিং বাজারে এসে হৈঁচৈ ফেলে দেয়। এখানে ফোন চার্জিং এর জন্য গতানুগতিক ওয়াল সকেটে প্লাগ ইন করার কোন দরকার নাই। কোন ধরনের তারের প্রয়োজন হয় না। ফলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তারের ঝামেলামুক্ত হয়ে আরামে ফোন চার্জ দিতে পারেন। বারবার প্লাগ ও আনপ্লাগ এর ঝামেলা না থাকায় ডিভাইস এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায় এবং চার্জিং পোর্ট ও ক্যাবল ব্যবহারের কারণে ফোনের ক্ষতিসাধন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ভুক ফ্লাশ চার্জিং:
২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ভুক ফ্লাশ চার্জিং প্রযুক্তি নিয়ে আসে স্মাটফোন ব্র্যান্ড অপো। এর মাধ্যমে আগের যেকোন সময়ের চেয়ে স্মার্টফোন চার্জিংয়ে এখন সময় কম লাগে। কোন কোন ব্র্যান্ডের এক ঘণ্টারও কম সময় লাগে। এতে ভোল্টেজ উঠানামা করলেও ফোনের কোন ক্ষতি হয় না এবং টেকসই ব্যাটারি নিশ্চিত হয়।
ভুক ফ্ল্যাশ চার্জ প্রযুক্তির আরো একটি সুবিধা হচ্ছে এটিতে রয়েছে পাঁচস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অ্যাপল, স্যামসাং, শাওমি ও আরো কিছু ব্র্যান্ডের ফ্লাশ চার্জিং প্রযুক্তি রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে অপো। অপো’র ভুক ফ্ল্যাশ চার্জের অনন্য একটি দিক হচ্ছে স্ক্রিন অন থাকা অবস্থায়ও এটি ফাস্ট চার্জ হবে।
সোলার চার্জার :
যতোই দিন যাচ্ছে মানুষ নবায়নযোগ্য জ্বালানির গুরুত্ব বুঝতে পারছে। পরিবেশ-বান্ধব হওয়ার কারণে বর্তমানে স্মার্টফোনে সোলার বা সৌর চার্জারের ব্যবহার শুরু হয়েছে। চার্জারের কার্যক্ষমতার উপর নির্ভর করে সৌর শক্তির মাধ্যমে কতোক্ষণ লাগবে মোবাইল চার্জ হতে। চার্জারের ক্ষমতা যতো বেশি হবে ততো দ্রুত মোবাইল চার্জ হবে। এর কোন গড় সময় নেই। তবে সর্বোচ্চ চার ঘণ্টার লাগতে পারে একবার মোবাইল চার্জ হতে।
বর্তমানে সোলার মোবাইল ফোন চার্জার জিএসএম মোবাইল ফোনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্যামসাং, এলজি সবার আগে বাজারে সোলার চার্জার আনলেও সেগুলো তেমন সুবিধা করতে পারেনি। অন্যান্য ব্র্যান্ড এটি নিয়ে কাজ করছে।
চার্জিং কিওকস :
ফোন চার্জ দেওয়ার আরেক জনপ্রিয় বিকল্প হচ্ছে কিওকস। বিভিন্ন মডেলের ফোন চার্জ দেওয়ার জন্য এতে রয়েছে নানা চার্জার। এটি সহজে ব্যবহারযোগ্য ও নিরাপদ। নিরাপত্তার স্বার্থে কোন কোনটির গোপন পাসওয়ার্ড রয়েছে। তবে গড়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগে না একবার ফুল চার্জ হতে। কিউআইস ওয়্যারলেস চার্জারের চেয়ে এটি দিগুণ ক্ষমতাসম্পন্ন।
উপরোক্ত চার্জিং প্রযুক্তির মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় চার্জিং প্রযুক্তি ফ্লাশ চার্জার। সবচেয়ে কম সময়ে নিরাপদে ফোনে চার্জ দেওয়া সম্ভব বলে এ প্রযুক্তি দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment