বাংলার বাঘিনী বনাম দিল্লির কাগুজে বাঘ : আলাপন ইস্যুতে মমতার পাশে সব রাজনৈতিক দল - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 1 June 2021

বাংলার বাঘিনী বনাম দিল্লির কাগুজে বাঘ : আলাপন ইস্যুতে মমতার পাশে সব রাজনৈতিক দল

বাংলার বাঘিনী বনাম দিল্লির কাগুজে বাঘ। এগিয়ে কে ? খেলা চলছে। খেলার কয়েক রাউন্ড ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। রয়েছে আরও রাউন্ড। খেলায় ট্রফির নাম আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব। তবে শেষ হয়ে যাওয়া রাউন্ডে ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছেন বাংলার বাঘিনীই। রাজনীতি ভুলে মমতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সব রাজনৈতিক দল। বাংলার বাঘিনী দিল্লির কাগুজে বাঘেদের থেকে এমনটাই মনে করছেন শিব সেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদ। তবে শুধু শিব সেনা নয়, আলাপন ইস্যুতে কংগ্রেস থেকে শুরু করে সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি, সকলেই বলছে, আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই রয়েছি। আলাপন ইস্যুতে তৃণমূলের পাশে দাঁড়াতে দ্বিধাবোধ করেনি কংগ্রেসও। উল্লেখ্য, গত ২৪ মে রাজ্যের আবেদনেই মুখ্যসচিব পদে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও তিন মাস কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় সরকার৷ গতকাল, অর্থাৎ ৩১ মে তাঁর অবসর নেওয়ার কথা ছিল৷ এর চার দিনের মাথায় গত ২৮ মে কেন্দ্রের তরফে হঠাৎই চিঠি পাঠিয়ে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে কাজে যোগ দিতে বলা হয়৷ আর এখানেই প্রশ্ন ওঠে, কেন কর্মজীবনের শেষ দিনে আলাপনবাবুকে দিল্লিতে বদলি করা হল৷ কারণ তাঁর চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল রাজ্যের করোনা অতিমারি ও ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতিতে কাজ করার জন্য৷ এরপরই সমস্ত বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে গতকালই নির্দিষ্ট সময়মত অবসর গ্রহণ করেন আলাপনবাবু৷ এই পরিস্থিতিতে অর্থাৎ বাংলার ভোটে বিজেপির ধরাশায়ী হওয়ার পর রাজ্যের সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যসচিবের বদলির নির্দেশকে দিল্লির তরফে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত বলেই মনে করছে দেশের বিরোধী শিবির। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছেন, "কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি করছে"। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলছেন,”এটি রাজ্য সরকারের সঙ্গে লড়াই করার সময় নয়। বরং, এসময় সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে করোনা মোকাবিলার করা উচিত কেন্দ্রের।” সমাজবাদী পার্টি ভোটের আগে থেকেই তৃণমূলের পাশে ছিল। আলাপন ইস্যুতেও ব্যতিক্রম হয়নি। এআইসিসির তরফে আগেই বিবৃতি দিয়ে এই ইস্যুতে তৃণমূলের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছিল। আগেই মমতার প্রশংসা করেছিলেন অধীর চৌধুরী। এবারেও ব্যতিক্রম নয়। শোনা গিয়েছে আমলা আলাপনের প্রশংসা করতে। আবার কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের একটি টুইটকে রিটুইট করে লিখেছেন “সুখেন্দুবাবুর প্রতি সহমর্মিতা রইল।” তৃণমূল সূত্রের খবর, গত দুদিনে উদ্ধব ঠাকরে, অখিলেশ যাদব, অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের মতো নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। কথা হয়েছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, বাংলার নির্বাচনে তৃণমূলের বিরাট জয়ের পরই জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে। আরও একবার বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা নিয়ে জল্পনা শুরু করেছে। আর এবারে বিরোধী জোটের মধ্যমণি হিসেবে ভাবা হচ্ছে মমতাকে। এর মধ্যে আলাপন ইস্যুকে সামনে রেখে সব বিরোধী দল যেভাবে মমতার পাশে দাঁড়াচ্ছে,তা আলাদা তাৎপর্য রাখে। খানিকটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এবার মমতাকে সমর্থন করছে কংগ্রেসও। উল্লেখ্য, গতকালই রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসর নেওয়ার পর, মুখ্য উপদেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ থেকে অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যসচিব হচ্ছেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবনের শেষে বিতর্কের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্ত নিলেন। কেন্দ্রের পাঠানো নির্দেশিকা মেনে দিল্লি যাবেন না আলাপন। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে কাজে যোগ না দেওয়ায় গতকাল বিকেলে ফের কেন্দ্রের তরফে চিঠি দিয়ে ফের নর্থ ব্লকে কাজে যোগদানের কথা বলা হয়। তারপরই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসরের সিদ্ধান্ত নেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad