ঋষিমা চট্টোপাধ্যায় , প্রেসকার্ড নিউজ : দীর্ঘ করোনার দাপটে ফুড়ুত প্রেমের আবেগ। হারিয়ে গেছে চুমুর অভ্যাস , চোখে চোখ রেখে রোমান্টিক ঘরে যাওয়া। ঠোঁট জিভ ভেঙচিয়ে খুনসুটি আর জড়িয়ে ধরে প্রিয় সেলফি তোলার মুহুর্ত।
চঞ্চল হয়েছে অতি নজরদারিতে থাকা প্রেমিকার প্রেমিক। দীর্ঘদিন ডেটিং না হওয়ায় প্রেমিক প্রেমিকার মনে ভর করেছে সন্দেহ। ভয় ধরেছে প্রেমিকের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে অতি ঘনিষ্ঠ হওয়া প্রেমিকার। বিষিয়ে ওঠা মন থেকে একটাই কথা বেশি প্রকাশ পেয়েছে আর ভালো লাগছেনা । এমন তথ্য উঠে এসেছে প্রেমিক প্রেমিকাদের থেকে।
কুড়ি জন প্রেমিক প্রেমিকার সাথে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কথা বলেছিল প্রেসকার্ড নিউজের টিম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মারফত পরিচয় করে বাছাই পর্ব শেষে যোগাযোগ করা হয় কুড়ি জন প্রেমিক প্রেমিকাদের সাথে।
দূরের জেলা থেকে কলকাতায় পড়তে আসা মেয়েটি দুবছরে শতাধিকবার অন্তরঙ্গ সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন হোটেলের ঘর থেকে বন্ধুদের বাড়িতে। শরীর মন নিংড়ে নেওয়া গভীরতার সম্পর্ক এখন পানসে হয়ে গেছে। মেয়েটি প্রেসকার্ড নিউজ টিমের সদস্যের সাথে কথা বলার সময় তাদের প্রেমজ সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় জানিয়েছেন।
মেয়েটির প্রেমিকের যোগাযোগ বলতে এখন ফোন। ফোনে প্রেমিককে বেশিক্ষণ পায় না। মেয়েটির হতাশার প্রশ্নে ছিল সন্দেহের ভাবনা। " এতদিন আমার সঙ্গ ছাড়া কী করে আছে জানিনা। আমি ছিলাম নেশা। নেশুড়ের মতন আমার থেকে নিংড়ে নিত সব কিছু। একটা মেয়ে হয়ে আপনাকে এটুকুই বলতে পারি। এর বেশি নয়। কি জানি পাড়ার কোনও মেয়েকে পেয়েছে কি না জানিনা।
বেসরকারী সংস্থার চাকরীরত যুবকের কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকা বাড়িতে কথা বলতে পারেনা ফোনে। বড় দুই দিদি সারাক্ষণ নজরে রাখে। একবারই মেসেজ এসেছে গত 18মাসে আমাকে ফোন কিংবা মেসেজ করবেনা। মেসেজ করলে মরা মুখটাও দেখতে পাবেনা। লকডাউন চলছে। ভালো থেকো বাবু।
তিন বার প্রতারিক হওয়া বছরে ৩২ এর যুবতীর একবার বিবাহ বিচ্ছেদের অভিজ্ঞতা আছে। অতঃপর ভালোবেসেছিল এক যুবকের প্রস্তাবে। সম্পর্কের শুরুতেই যুবতী বলেছিল, আর আঘাত নিতে পারব না। ছেড়ে যেওনা। বিয়ে না করলেও যোগাযোগ রেখো। মনের কিছু কথা বলারও লোক নেই আমার। প্রেমিক যুবক যুবতীর প্রেমে হাবুডুবু। আনন্দে বিহ্বল। দীর্ঘ করোনা বিধিতে দেখা হয়নি তাদের। প্রেমিক যুবকের কথায়, কথা হয় তুই তোকারি বন্ধুত্বে। একান্তে কথা হয়নি বহু দিন। সারাক্ষণ মা অথবা বোন থাকে পাশে। অজুহাতে ভরা প্রেম। আবেগহীন শুকনো কথা। কিছু বললেই হাসে। যন্ত্রের মেয়েদের হাসি যেমন হয়। চরম হতাশা থেকে ভালোবাসা দিয়ে তুলে এনেছিলাম। হাসাতে শিখিয়ে ছিলাম। সেই মেয়ে এখন মা বোন ভাইদের সাথে হাসে। আমাকে শোনায় অট্টহাসি। ভেবেছিলাম দুক্ষিরা বোধকরি দুক্ষ বোঝে। আসলে আমার ভাবনাই ছিল ভুল। মেয়েটিকে ভোলার চেষ্টা করেছি যতবার ততবারই ভেসে ওঠে ওর মুখ। মনে পড়ে সম্পর্কের শুরুর দিকের কাতর আবেগ। সেদিনের কাতরতার সাথে আজকের হাসি মেলালে ওর প্রতি করুণা হয়। নিজেকে নিয়ে নিজেই গর্ব বোধ করি। কষ্ট পেলেও কোনও মেয়ের মুখে হাসি ফেরাতে পেরেছি।
বাকি ১৪ জন প্রেমিক প্রেমিকারা কথা বলার সময় মন খুলে তাদের নিজেদের কথা বলেছেন। কেউ চোখের জল ফেলেছেন উল্টোদিকের মানুষটির কথা বলতে বলতে। কেউ আবার আবেগপ্রবণ হয়ে বলেছে এখন রাখছি।
তবে মেয়েদের তুলনায় বেশি সংখ্যক ছেলেরাই তাদের কষ্টটা তুলে ধরেছেন। বলেছেন প্রেমিকার অভাব। খুনসুটি থেকে নানা মুহুর্ত ফিরে পেতে অপেক্ষা করছেন তারা। কবে পৃথিবী সুস্থ হবে? সেই অপেক্ষায় প্রেমিক প্রেমিকারা।
প্রিয় পাঠক আপনারা আপনাদের যে কোনও সমস্যার কথা জানাতে পারেন। মন খুলে নিজের কষ্ট বিশ্বকে জানিয়ে হাল্কা হতে পারেন। যোগাযোগ করুন, presscardmind@gmail.com মেইলে। পাঠিয়ে দিন লিখে অথবা ভয়েজ করে আপনার অভিজ্ঞতা। আপনার মনের কথা।
প্রতিবেদনটি লিখতে তথ্য দিয়েছেন : নীলাঞ্জনা, রেশমী, শতরূপা, রোহিনী ও মনস্মিতা ।
No comments:
Post a Comment