ভ্রমণের জমানো টাকা দিয়ে করোনা আবহে আর্তের সেবায় বারাসাতের ব্যানার্জী পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা উত্তর ২৪ পরগনা:  নৈসর্গিক সুখ খুঁজতে বরফে মোড়া শৈল শিখরে না গিয়ে করোনা আবহে আতঙ্কের উপত্যকা হয়ে ওঠা নিজের শহরের অসুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন বারাসাতের ব্যানার্জী পরিবার। করোনা আক্রান্ত অসুখে জেরবার পরিবারগুলিতে যখন নাভিশ্বাস আর রান্নার পাট শিকেয় উঠেছে তখন রান্না করা খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছেন তাঁরা। করোনা আবহে মানবিক মুখ বারাসত পুরসভার ২৪ নং ওয়ার্ডের ঠাকুর দাস সরনীর সৌগত ব্যানার্জী ও ঐন্দ্রিলা ব্যানার্জী।

সৌগত ও ঐন্দ্রিলা বন্দোপাধ্যায় গত লক ডাউনের আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন যে স্বামী স্ত্রী এবার গরমে মোটর সাইকেলে লে লাদাখে ঘুরতে যাবেন। লাখ দুয়েক টাকাও ট্যুরের জন্য বাজেট করেন। কিন্তুু করোনার দ্বিতীয় ঠেউ তাদের বেড়ানোর সব ইচ্ছায় বাধ সাধে। এরই মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঠেউ এ স্যোশাল মিডিয়া ছয়লাপ আতঙ্ক, অসহয়তা আর পাশে দাঁড়াবার প্রতিশ্রুতিতে। গত লকডাউনে দুই সন্তানের ইচ্ছায় যত সামান্য নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবার চেস্টা করে ছিলেন তারা। ঐন্দ্রিলা ব্যনার্জী  নিজে হোম মেড কেকের ব্যবসা করেন। স্বামীকে বলেন তাঁরা যদি করোনা আক্রান্ত পরিবারকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করে কেমন হয়। যেমন ভাবা তেমন কাজ। সঙ্গে সঙ্গে স্যোশাল মিডিয়াতে করোনা আক্রান্ত পরিবারকে খাবার দিয়ে সেবা করার পোস্ট দেন তারা। পরের দিন বেলা ১১ টায় চার জন সুনাগরিকের থেকে খাবারের বরাত আসে। গত দিন দশ ধরে সেই চাহিদা চল্লিশে পৌছেছে। স্বামী সকালে বাজার করছে। আর স্ত্রী দুপরের মধ্যে রান্না করে খাবার প্যাকেট বন্দী করেছে আত্মীয় প্রতিবেশীদের নিয়ে। 

তারপর বাইক নিয়ে  লে লাদাখ নয় বারাসত শহরের অলিগলি পেড়িয়ে আর্তের বাড়িতে খাবার পৌছে দেওয়ার মিশন। সব শেষে আবার রাতের খাবার তৈরি ও পৌছে দেওয়া। ঐন্দ্রিলার এখন বলছে তাঁদের খাবারের চাহিদা বেড়ে যাওয়া সহযোগী একজনকে নিয়েছেন তারা। আর বারাসত  শহরের পাঁচ-দশ কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই শুধু তারা এই একান্ত পারিবারিক উদ্যোগকে নিয়ন্ত্রিত রেখেছেন। সৌগত ব্যানার্জীর কথায় তাদের দুই সন্তানের আগ্রহের জন্যই তারা এই কাজে ঝাপিয়ে পড়েছেন। ব্যানর্জী দম্পতির দাবী প্যাঙগং লেকের সৌন্দর্যের থেকেও বেশী তৃপ্ত তারা। তাঁদের মানবিক দৃষ্টান্ত প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে করোনা পীড়িত মানব সমাজের কাছে।