নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আর. পি. এফ. এর তৎপরতায় বাড়ি ছেড়ে আসা বছর ৩০ এর গৃহবধূ চন্দনা বাগদী জীবন ফিরে পেল। দঃ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকার গরীব বাড়ির গৃহবধূ চন্দনা বাগদী সর্দার। জানা গেছে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কলকাতার সল্ট লেকের একটি কারখানায় দীন মজুরের কাজ করতো।
কিন্তু লক ডাউনের ফলে গত বছর তারা কাজ হারিয়ে বাড়ীতে কোনরকমে দিন কাটাত। এই নিয়ে প্রতিদিন পরিবারে অশান্তি লেগে থাকত। বাড়ীর সাথে ঝগড়া করে মনের দুঃখে গত তিন দিন আগে একা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। জয়নগর থেকে মাল গাড়িতে তার যাত্রা শুরু হয়। এরপর বারইপুর পর্যন্ত আসার পর বারইপুর থেকে অন্য গাড়ি ধরে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় পৌছায়।
পাঁশকুড়া থেকে হলদিয়াগামী মালগাড়িতে উঠে পড়ে। গত পরশু সন্ধ্যে নাগাদ পাঁশকুড়া হলদিয়া শাখার রাজগোদা স্টেশানে নেমে পড়ে। স্টেশানে একটি ঝোপের আড়ালে রাত্রি কাটায় পরদিন সকাল বেলায় রেল পুলিশের নজরে এলে রেল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে সে পরিবারের সাথে ঝগড়া বিবাদ করে বেরিয়ে এসেছে, তিনি আত্মহত্যা করতে চায়।
বছর ত্রিরিশের এই মহিলার সাথে একটি ব্যাগে জামা কাপড় আধার ও রেশন কার্ড ছিল। মহিলা পুলিশ সেগুলি স্যানিটাইজ করে উদ্ধার করে বাড়ির সাথে যোগাযোগ করলে বাড়ির লোক আর্থিক সংকট ও ঐ এলাকায় লকডাউনের ফলে আসতে না পারায় তমলুক মহকুমা শাসক এবং জেলা সমাজ কল্যান আধিকারিকের নির্দেশে নিমতৌড়ী তমলুক উন্নয়ন সমিতি স্বধর গৃহ হোমে সুরক্ষিত অবস্থায় আশ্রয় হয় চন্দনা বাগদীর।
হোমের কাউন্সিলার আলপনা মাইতি কাউন্সিলিং করে জানতে পারে নিঃসন্তান এই মহিলা কোলকাতা সল্ট লেকে দিন মজুরের কাজ করার সময় আলাপ হয় জয়নগরের বাসিন্দা রবীন সর্দারের সঙ্গে। হোম কতৃপক্ষ জানায়, তার কোভিড টেস্ট করা হবে যদি তার কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তাহলে সে এখানে বাকিদের মতো জীবন যাপন করবে।
বর্তমানে তাকে আইলোশনে রাখা হয়েছে। তবে যে রেল পুলিশকে অনেক সময়েই ‘নীরব দর্শক’ কিংবা ‘কাঠের পুতুল’ কটাক্ষ শুনতে হয় হামেশাই, তাঁরাই আজ সক্রিয় হয়েছেন। তমলূক রেল পুলিশ এমন মানবিকতার কাজে বাহবা কুড়িয়েছেন আমজনতার।
No comments:
Post a Comment