প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক: বিহারের মুজাফফরপুর শহরে করোনার রোগীদের চিকিৎসা করা বেসরকারী হাসপাতালগুলি রোগীদের স্বজনদের কাছ থেকে নির্বিচারে অর্থ আদায় করছে। এমনকি রোগীর মৃত্যুর পরেও হাসপাতাল প্রশাসন বাকী অর্থ পরিশোধের পরেই স্বজনদের মৃতদেহ দিচ্ছে। বুধবার একই রকম একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। নগরীর একটি বেসরকারী হাসপাতাল ৪০,০০০ টাকার বিনিময়ে এক বৃদ্ধের মৃতদেহ স্বজনদের দিতে অস্বীকার করেছে। বিষয়টি সিভিল সার্জনের কাছে পৌঁছনোর পরে তার হস্তক্ষেপে মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আঘোরিয়া বাজার এলাকার এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। শুক্রবার, তার পরিবারের সদস্যরা তাকে শহরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির সময় হাসপাতালটি প্রথমে এক লাখ টাকা জমা দিতে বলে। পরিবার যখন জানিয়েছিল যে তখন তাদের কাছে ১ লক্ষ টাকা নেই, তখন হাসপাতাল তার চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানায়। কোনোরকমে স্বজনরা ৪০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিল। তারপরে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
দুদিন পরে চিকিৎসার সময় ওই প্রবীণ ব্যক্তি মারা গেলেন। হাসপাতাল কতৃপক্ষ করোনার কারণে তার মৃত্যু হওয়ার কথা বলে আরও ৪০,০০০ টাকার দাবি করেছিল। টাকা না দিলে হাসপাতাল মৃতদেহ দিতে অস্বীকার করে। পরিবার যখন হাসপাতাল কতৃপক্ষকে করোনার পজিটিভ হওয়ায় মৃত্যুর রিপোর্ট দিতে বলেছিল, হাসপাতাল প্রশাসন তাও দিতে অস্বীকার করেছিল। এদিকে নিহতের এক আত্মীয় সিভিল সার্জন ডাঃ এসকে চৌধুরীকে বিষয়টি অবহিত করেছিলেন। সিভিল সার্জন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার সাথে কথা বলে এবং নিঃশর্ত দেহ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরে হাসপাতাল কতৃপক্ষ মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।
সিভিল সার্জন বলেছিলেন যে বেসরকারী হাসপাতালগুলি ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করছে। এর তদারকির জন্য প্রতিটি হাসপাতালে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন করে চিকিৎসক মোতায়েন করা হয়েছে। হাসপাতালকে চিকিৎসায় ব্যয়ের বিবরণও প্রতিদিন একটি ফরম্যাটে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ জাতীয় অভিযোগ পেলে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। একই সঙ্গে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানিয়েছিলেন যে উক্ত মামলার তদন্তও চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে, হাসপাতাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments:
Post a Comment