নিজস্ব প্রতিবেদন: শুক্রবার দুপুরে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই একাধিক নেতানেত্রীর মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। কেউ আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কেঁদে ভাসিয়েছেন, তো কেউ আবার দিয়েছেন হুঁশিয়ারি। আরাবুল থেকে শুরু করে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই সকলের গলাতেই অভিমান ও ক্ষোভ মিশ্রিত সুর।
এদিন প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর জানা যায় তাতে নাম নেই আরাবুল ইসলাম, সোনালী গুহ, মইনুদ্দিন শামস, সিঙ্গুরের রবীন্দনাথ ভট্টাচার্য সহ অনেকেরই। ভাঙরে নির্বাচনে লড়াইয়ের টিকিট না পেয়ে একেবারে ভেঙে পড়েন আরাবুল। টিকিট না পাওয়ার দুঃখ ব্যক্ত করতে গিয়ে কেঁদেই ফেলেন আরাবুল। বলেন, ‘এই দলটাকে বুকে আঁকড়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করেছি। ভাঙড়ের মানুষের পাশে থেকেছি। এখন ভাঙড়ের মানুষ যা বলবেন, আমি তাই করব।‘ ২০০৬ সালে যখন রাজ্যজুড়ে বামেদের আধিপত্য চরমে, তখন ভাঙড়ে তৃণমূলের পতাকা উড়িয়েছিলেন আরাবুল। আর তিনিই কি না এবার টিকিট পেলেন না! এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিক্ষোভ শুরু করে দেন আরাবুল অনুগামীরা। এমনকি ভাঙড়ের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন তারা। ভেঙে দেওয়া হয় তৃণমূলের কার্যালয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়া থেকে চারবারের জয়ী সোনালী গুহও টিকিট না পেয়ে কেঁদে ভাসালেন। আক্ষেপ ও অভিমানী সুরে বললেন, দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার একটা দাম দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস। ভালোই সম্মান পেলাম। আক্ষেপ করে এও বলেন, আমি মমতা দির বাড়ীর লোক ছিলাম। মমতাদি এটা করতে পারেন, বিশ্বাস করতে পারছি না। 'দিদি যেন এবারও মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন‘ বলেও অবশ্য এদিন শুভকামনা জানান তিনি।
এদিকে নলহাদিটির বিদায়ী বিধায়ক মইনুদ্দিন শামস টিকিট না পেয়ে কান্না ভেজা চোখ ও ক্ষুদ্ধ গলায় দল ছাড়ার পাশাপাশি পাথরচাপুরি উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিতে চলেছেন বলে জানান। এমনকি অন্য দলের হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে থাকবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। টিকিট না পেয়ে আবার সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইও বেচারামের হয় ভোটের প্রচার করবেন না বলেই সাফ জানিয়ে দেন। সেইসাথেই আক্ষেপ প্রকাশ করতে দেখা যায় বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক প্রাক্তন ফুটবলার দিপেন্দু বিশ্বাসকেও। তিনি জানান, ‘আমি হার্ড ওয়ার্ক করেছি। উন্নয়নের প্রচুর কাজ হয়েছে। কিন্তু গোল করেও খেলার সুযোগ পেলাম না। তবে, সিদ্ধান্ত দলের তরফে আগে জানালে ভাল লাগতো।’
এছাড়াও তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা যায় দলীয় কর্মী সমর্থকদের। কেউ পছন্দের প্রার্থী চেয়ে বা কেউ বহিরাগত প্রার্থীকে ইস্যু করে বিক্ষোভ দেখান। আর তালিকা প্রকাশ হতেই জায়গায় জায়গায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
No comments:
Post a Comment