নিজস্ব প্রতিনিধি, বীরভূম: ছ'টি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বদল হল বীরভূমে। এর মধ্যে পাঁচটি বিধানসভা এলাকায় নতুন মুখ এবং এক বিধায়কের কেন্দ্র বদল করা হল। শাসক দলের প্রার্থী বদল কে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। যদিও বিরোধীদের কটাক্ষকে আমল দিতে রাজি নয় শাসক দল তৃণমূল।
বীরভূম জেলায় ১১ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ছটি কেন্দ্রের প্রার্থী বদল হল। দুবরাজপুর, সিউড়ি, নানুর, লাভপুর, হাসন এবং নলহাটি কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করা হয়েছে। সিউড়ির বর্তমান বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়কে হাসন কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। সেই স্থানে সিউড়ি কেন্দ্রে জেলা পরিষদের বর্তমান সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে শাসক দলের পক্ষ থেকে। বিগত ২০১৩ সাল থেকে তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে দায়িত্বে আছেন। বিকাশবাবু দক্ষ প্রশাসক হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সরকারি কাজে বীরভূম জেলা পরিষদ, কেন্দ্র সরকারের বেশ কয়েকবার সেরা জেলা পরিষদের শিরোপা পেয়েছেন। এই কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করে বিকাশ রায় চৌধুরকে প্রার্থী করে সিউড়ি বিধানসভায় ফের বাজিমাত করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে দুবরাজপুর বিধানসভার বর্তমান বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউরিকে প্রার্থীপদ দেওয়া হয়নি। তাকে সরিয়ে খয়রাশোল এলাকার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অসীমা ধীবরকে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম লগ্ন থেকেই দলের সঙ্গে ছিলেন। কংগ্রেসি আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতিতে তিনি সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন এবং ২০১৮ সাল থেকে সহ-সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্বে আছেন ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে।
অন্যদিকে সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক নীলাবতী সাহাকে ফের প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। নানুর কেন্দ্রে বিধান চন্দ্র মাঝিকে প্রার্থী করা হয়েছে। বর্তমানে ওই বিধানসভায় সিপিএমের শ্যামলী প্রধান বিধায়ক। বিগত বিধানসভায় শাসক দলের প্রার্থী ছিলেন গদাধর হাজরা, তিনি বর্তমানে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। লাভপুরের প্রার্থী করা হয়েছে বীরভূম জেলা পরিষদের মুখ্য পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিনহাকে। তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে এবার প্রথমবারের জন্য ভোটের ময়দানে লড়াই করতে নেমেছেন। বর্তমান বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বোলপুরে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে ফের প্রার্থী করা হয়েছে। রামপুরহাটে মন্ত্রী আসিস বন্দোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেছে দল। অন্যদিকে মুরারই ও ময়ূরেশ্বর কেন্দ্রে যথাক্রমে বর্তমান ২ বিধায়ক আব্দুর রহমান লিটন এবং অভিজিৎ রায়কে প্রার্থী করা হয়েছে। অন্যদিকে নলহাটি কেন্দ্রে বর্তমান বিধায়ক মইনুদ্দিন শামসকে টিকিট দেওয়া হয়নি। তার জায়গায় নলহাটি পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের পুর প্রধান রাজেন্দ্র প্রতাপ সিংহ কে প্রার্থী করা হয়েছে।
এদিকে শাসকদলের প্রার্থী বদলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধী দল বিজেপি থেকে জাতীয় কংগ্রেস। বীরভূম জেলা বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে তার বিধায়কদের ওপর আস্থা নেই সেখানে সাধারণ মানুষ কিভাবে তাদের ওপর আস্থা রাখবে। তাদের প্রার্থী বদল কোনভাবে কাজে লাগবে না। শাসক দলকে সাধারণ মানুষ সব জায়গায় পরাজিত করবে।" বীরভূম জেলা জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি তথা বিধায়ক মিল্টন রশিদ বলেন, "বিধায়ক যদি ভালো কাজ করেছে তাহলে তাকে বদল বা কেন্দ্র পরিবর্তন করতে হচ্ছে কেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। এই বিধানসভায় তাদের পরাজয় নিশ্চিত।" জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন," বীরভূমের প্রতিটি কেন্দ্রে আমরা জয়লাভ করবো। ভালোর জন্যই কয়েকটি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বদল করেছে।"
No comments:
Post a Comment