উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথম দিনেই ‘জয়ী সেতু’ ও দেবী কামতেশ্বরী" সেতুর উদ্বোধন করে সাধারণ মানুষের মন জয় করলেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার:  উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথম দিনেই হলদিবাড়ি ‘জয়ী সেতু’, সাগরদিঘী ঘাটের "দেবী কামতেশ্বরী" সেতুর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথম দিন সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ি বাঘা যতীন পার্কে উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চ থেকে রিমোটের মাধ্যমে হলদিবাড়ি ‘জয়ী সেতু’ ও সিতাই ব্লকের "দেবী কামতেশ্বরী" সেতুর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন জয়ী সেতুর উদ্বোধন ঘিরে মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির  মানুষের বাঁধন হারা উচ্ছ্বাস ছিল অবাক করার মতো। মুখ্যমন্ত্রী রিমোটে সেতু উদ্বোধন করতেই জয়ী সেতু লোকে লোকারন্য হয়ে যায়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত কোচবিহারের জেলা শাসক পবন কাদিয়ান, মেখলিগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান, চ্যাংড়াবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র অধিকারী প্রমুখ। মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির মানুষের স্বপ্নের জয়ী সেতুর উদ্বোধনে এদিন মেখলিগঞ্জ মহকুমা জুড়ে উৎসবের আবহ তৈরী হয়। এদিন কাতারে কাতারে সেখানে মানুষ জড়ো হয় ও উলু দিয়ে, শঙ্খ বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মেখলিগঞ্জ মহকুমার মানুষ। 

পূর্ত দপ্তর সূত্রে খবর, তিস্তা নদীর উপর ৭৮টি পিলার যুক্ত ২.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রায় ৪১৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এতদিন মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির  নদীপথে নৌকার করে পাড়াপার চলতো। তবে বর্ষার সময়  জলপাইগুড়ি শহর হয়ে প্রায় ১৫০ কিমি ঘুরপথে হলদিবাড়ি ব্লক থেকে মেখলিগঞ্জ ব্লকে এবং মেখলিগঞ্জ থেকে হলদিবাড়ি পৌঁছাতে হত। এই জয়ী সেতু তৈরী হওয়ায় মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির মধ্যে দূরত্ব দাঁড়াবে মাত্র ১৫ কিমি।

পাশাপাশি "দেবী কামতেশ্বরী" সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সিতাই ব্লকের "দেবী কামতেশ্বরী" সেতু সংলগ্ন স্থানে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক উদয়ন গুহ, দিনহাটা মহকুমার মহকুমা শাসক হিমাদ্রি সরকার সহ সিতাই ব্লকের স্থানীয় বাসিন্দারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দেড়শো কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরবঙ্গের অন্যতম ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটি তৈরি হয়েছে। সিতাই, শীতলকুচি এলাকার মানুষদের মাথাভাঙ্গা হয়ে প্রায় ৯০ কিলোমিটার পথ ঘুরে দিনহাটায় অফিস - আদালত, স্কুল-কলেজে আসতে হতো। ফলে এক নরক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে কাটত সিতাই ও শীতলকুচি এলাকার বাসিন্দাদের। সিতাই, শীতলকুচি এবং দিনহাটার সাধারণ মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবী ছিল সিতাই ব্লকের সাগরদীঘির ঘাটের সেতুর। এই সেতু এদিন উদ্বোধন হওয়ায় মাথাভাঙ্গা, শীতলকুচি, সিতাই এবং দিনহাটার মধ্যে দূরত্ব অনেকটাই কমে গেল। ফলে খুশি সাধারণ মানুষ।