মমতা ব‍্যানার্জীর পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে, ঈশ্বর কারও অংহকার বরদাস্ত করেন না: শোভন

নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: 'আজ থেকে ১০ বছর আগে সিপিআইএম-এর হাত থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একজন অভিনেত্রীকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তখন আমি তৃণমূলের দায়িত্বে ছিলাম। ১০ বছর পর আজকে রায়দিঘী এসে, রায়দিঘীর পরিস্থিতি দেখে আমার মনে হচ্ছে আজ আমি প্রায়শ্চিত্ত করতে এসেছি। যে তৃণমূলকে আমি বুকে করে তৈরী করেছি, সেই তৃণমূল আজ কূল হারাচ্ছে।' রায়দিঘীর খাড়ি গুণসিন্ধু বালিকা বিদ‍্যাপিঠের মাঠে জনসভায় যোগ দিতে এসে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন শোভন চ্যাটার্জী‌।

এদিন বিজেপির এই জনসভায় শোভন চ‍্যাটার্জীর সাথে উপস্থিত ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসভা থেকে শোভন চ‍্যাটার্জি বলেন, আমরা যেদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। সেদিন রায়দিঘীর বিধায়িকা তৃণমূলে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেদিন আমি বলেছিলাম, রায়দিঘীর বহু মানুষের কাছ থেকে টোটো দেওয়ার নাম করে যে মানুষ টাকা তুলেছিলেন, তিনি যোগ দিলে আমাদের ক্ষমা করবেন। তাঁকে নেওয়া হয়নি। আমি তখন তৃণমূল করতাম তাই আমি ক্ষমা করবেন। কিন্তু এর দায়ও মুখ‍্যমন্ত্রীর। দেবশ্রীকে আজও বহিস্কার করেনি তৃণমূল। তাকে বহিস্কার না করলেও রায়দিঘীর মানুষ তাকে বহিস্কার করার জন্য তৈরী। ইতিহাস ভুলে যাবেন না, মানুষ একবার ক্ষমা করে, কিন্তু বারবার করে না। 

তিনি আরও বলেন, আগামীদিন বিধানসভা আসছে। ৩৪ বছর সিপিআইএম-এর বিরুদ্ধে রায়দিঘীতে বহুবার এসেছিলাম, মমতা ব‍্যানার্জীর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। কিন্তু আজ আমাদের মিছিলের গাড়ি আটকাচ্ছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ৮৩ টা জেলা পরিষদ সিটের মধ‍্যে ৭৩ টা সিট আপনারা জোর করে দখল করে বসে আছেন। কেন এই দখলদারি? কারণ মমতা ব‍্যানার্জী জানেন মমতা ব‍্যানার্জীর পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। ঈশ্বর কারও অংহকার বরদাস্ত করেন না। জেনে রাখুন আপনি চাল চুরি করবেন, মানুষ আপনার ভোট চুরি করবে। আমি বলব সময় এসে গেছে আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার, মে মাসে সাধারণ নির্বাচন, দক্ষিণ ২৪ পরগণার অধিকাংশ আসনে ভারতীয় জনতা পার্টি জিতবে।' 

এই জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বৈশাখী ববন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আপনাদের এই জায়গা নিয়ে আমার মনকষ্ট আছে। আপনাদের রাস্তা এত খারাপ, যা দেখে মনে হচ্ছে, এত অনুন্নয়ন কেন, তারপর মনে হল আপনারা যাকে নির্বাচিত করেছিলেন তিনি অভিনেত্রী। সেজন‍্য উন্নয়ন হয়নি। আপনারা সে ভুল আর করবেন না। রাজ‍্যে একটি দল আর কেন্দ্রে আর একটি দল না হয়। মঞ্চ থেকে তিনি স্লোগান তোলেন ঘরে ঘরে পদ্ম, দিদিমণি জব্দ, এই স্লোগান যেন রায়দিঘী থেকে কালীঘাটে পৌছায়, তা দর্রশকদের উদ্দেশ্যে বলেন।