নিজস্ব সংবাদদাতা, উওর ২৪ পরগনা: এ-যেন চুরি-ডাকাতির উৎসব! শীতের ভর সন্ধ্যায় হাবড়া-অশোকনগর এলাকা জুড়ে চলে রাতভর চুরি-ছিনতাই, এমনকি একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুঃসাহসিক ডাকাতি, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
স্কুল শিক্ষকের বাড়ীতে আগ্নেয়াস্ত্র এবং ধারালো অস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে পরিবারের সদস্যদের ঘরের ভেতর আটকে চলে দুঃসাহসিক ডাকাতি, ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়ার নতুনহাট রাঘবপুর এলাকায়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভর সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা নাগাদ ছ'জনের ডাকাত দল তিনটি বাইকে করে আসে। এরপর প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে বাড়ীর সদস্য পেশায় স্কুল শিক্ষক দীপঙ্কর সিকদার, ভাই শুভঙ্কর শিকদার, বাবা সুবল শিকদার, মেয়ে স্বপ্না দাস শিকদার, বউমা সুপ্রিয়া শিকদার এবং ছোট দুই সদস্য সকলকে মুখ চেপে ধরে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ও গলায় ধারালো দা ধরে এক ঘরে আটকে রেখে দুঃসাহসিক ডাকাতি করে। তিনটি ঘরে লন্ডভন্ড করে দুটি আলমারি থেকে আনুমানিক পাঁচ থেকে ছয় ভরি সোনার গয়না ও নগদ প্রায় ৩০ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ডাকাতদল। পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের চারটি মোবাইল ফোন নিয়ে চম্পট দেয় ওই ডাকাতদল। ঘটনায় আতঙ্কিত দীপঙ্কর শিকদার নামে শিক্ষকের পরিবার। ঘটনাস্থলে খবর পেয়ে আসে হাবড়া থানার পুলিশ ও বারাসত পুলিশ, জেলার আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে সন্দেহভাজন ভাবে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে হাবড়া থানার পুলিশ। পাশাপাশি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ।
পাশাপাশি একই রাতে পাশ্ববর্তী অশোকনগর থানার মঙ্গলবার রাতে অশোকনগর স্টেশন লাগোয়া আশ্রাফাবাদ এলাকায় বাড়ীর গেটের সামনে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ব্যবসায়ী তপন বিশ্বাসের কাছ থেকে নগদ পঁচিশ হাজার টাকা সহ দেড় লক্ষ টাকা মূল্যের গলার মোটা সোনার চেইন নিয়ে চম্পট দেয় ছিনতাইকারীরা।
ঐ রাতেই অশোকনগর থানার গুমা নেতাজি নগর এলাকায় প্রদীপ ভট্টাচার্যের বাড়ীতেও ঘটেছে দুঃসাহসিক চুরি। এদিন সন্ধ্যায় পাশের পাড়াতে বড় মেয়ের বাড়ীতে লক্ষ্মী ভট্টাচার্য সহ তার পরিবারের সদস্যরা কয়েক ঘন্টার জন্য নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে রাতেই ফিরে এসে দেখে ঘর লন্ডভন্ড। ঘরে থাকা সমস্ত সোনার ও রুপোর গহনা নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোর বাবাজীর দল, ঘটনায় আতঙ্কিত ভট্টাচার্য পরিবার।
অশোকনগর তিন নম্বর রেলগেট এলাকায় অরুনা মুখার্জির বাড়ীতেও মঙ্গলবার রাতে একটি ঘরের জানালা দিয়ে ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় ঘটে। তবে চোরের ছবি সিসিটিভি বন্দী। ঘটনায় আতঙ্কিত পরিবার।
ঘটনায় অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় প্রত্যেক পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে একের পর এক অশোকনগরের চুরি ছিনতাইের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে নানান প্রশ্ন। একই দিনে হাবড়া থানা এলাকায় ভর সন্ধ্যায় দুঃসাহসিক ডাকাতির পর ফের পার্শ্ববর্তী থানা অশোকনগর এলাকায় একের পর এক চুরি। আতংকিত এলাকার সাধারণ মানুষ।
No comments:
Post a Comment