বিজেপির টার্গেটে খাদ্যমন্ত্রী কেন ? - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 17 November 2020

বিজেপির টার্গেটে খাদ্যমন্ত্রী কেন ?

 




বিজেপির টার্গেটে খাদ্যমন্ত্রী কেন ? 




দু'জন দুই আলাদা জেলা থেকে নির্বাচিত। তবু অব্যাহত দ্বৈরথ। ২০১৮ সাল থেকে চলছে চ্যালেঞ্জ ও চ্যালেঞ্জের পরম্পরা। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বনাম দিলীপ ঘোষ। 'সন্ন্যাস' নেওয়া থেকে 'গুন্ডা' বলা। যে কোনও দলীয় কর্মসূচিতে সব বিষয় ছেড়ে পরস্পরকে চ্যালেঞ্জ করাই যেন রেওয়াজ। সোমবার সকালে জ্যোতিপ্রিয়র জেলা সদর বারাসতে দাঁড়িয়ে তাঁকে আরও একবার চ্যালেঞ্জ করে গেলেন দিলীপ। বললেন, জ্যোতিপ্রিয়কে যে কোনও আসনেই হারাব।

মঙ্গলবার হাবড়ায় এসে দিলীপ ঘোষকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । "২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে যেখানে দিলীপ ঘোষ দাঁড়াবে সেখানেই হারাব। ,আমাকে হারিয়ে দেখাক , হাবড়ায় নিজের জন্মদিনের একটি অনুষ্ঠানে এসে বলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।



শুরুটা হয়েছিল গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে। গাইঘাটায় ভোট প্রচারে গিয়ে দিলীপ বলেছিলেন, খাদ্যমন্ত্রী তাঁর জেলায় এবার পঞ্চায়েত বাঁচাতে পারবেন না। চ্যালেঞ্জ করে গেলাম। ঠিক তার পরের দিন সেই গাইঘাটায় গিয়ে জ্যোতিপ্রিয় পালটা চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, জেলার ২০০ পঞ্চায়েতের মধ্যে দিলীপ ঘোষ যদি একটা পঞ্চায়েত জিততে পারেন, আমি রাজনীতি ছেড়ে সন্ন্যাস নেব। সেবার অবশ্য বিজেপি গাইঘাটা, বনগাঁ ও বাগদা ব্লকের বেশ কয়েকটা পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশভাবে জয়ী হয়েছিল। জ্যোতিপ্রিয় সন্ন্যাস নেননি।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও জাতীয় বা রাজ্য রাজনীতির প্রসঙ্গ ছেড়ে দিলীপ-জ্যোতিপ্রিয় পরস্পরকেই আক্রমণের নিশানা করে গিয়েছেন। সন্দেশখালির গণহত্যার পরের দিন ঘটনাস্থলে গিয়েও দুই নেতা পরস্পরকে নিশানা করে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন। মাঝে উত্তর ২৪ পরগনার প্রায় সব কর্মসূচিতে পরস্পরকে টানা আক্রমণ ও চ্যালেঞ্জ করে গিয়েছেন। জ্যোতিপ্রিয় 'পাগল' বললে দিলীপ পালটা বলেছেন 'গুন্ডা'।
সোমবারও অব্যাহত রইল সেই চ্যালেঞ্জ। এদিন 'বালু'চরে দাঁড়িয়ে দিলীপ আরও একবার জ্যোতিপ্রিয়কে চ্যালেঞ্জে করে গেলেন। সম্প্রতি জ্যোতিপ্রিয় বলেছেন, 'উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় দিলীপ ঘোষরা ৫০ শতাংশ বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারবেন না। তার জবাবে এদিন দিলীপ পালটা বললেন, 'মাঠে নেমে দেখা যাবে কে কী করতে পারেন। ঠান্ডাঘরে বসে অনেক ডায়ালগ দেওয়া যায়। সীমান্তে দেড়শো গাড়ি চাল-গম ধরা পড়েছে। তার কাটমানি কে পায়, তা সবাই জানে। উনি (জ্যোতিপ্রিয়) কোথায় দাঁড়াবেন, আগে সেটা ঠিক করুন। আমি চ্যালেঞ্জ করে গেলাম, জ্যোতিপ্রিয় যেখানে দাঁড়াবেন, সেখান থেকে তাঁকে হারাব।'

উত্তর 24পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তথা খাদ্যমন্ত্রী হলেন জেলার একমাত্র লড়াকু জনপ্রিয় জন নেতা । বাম বিজেপি ও কংগ্রেস শুধু নয় উত্তর চব্বিশ পরগনায় তৃণমূল কংগ্রেসেও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মত সমতুল্য নেতা আর নেই। বালু দা বললেই মিষ্টি হাসিতে সাংবাদিক থেকে জনসাধারণ সবার কথা তিনি শোনেন। সমস্যা সমাধান করতে পারুক না পারুক তিনি ছুটে যান ডাক পেলেই। এমনকি উত্তর চব্বিশ পরগনায় বাম কংগ্রেস তৃণমূল ও বিজেপিতে যত জনপ্রতিনিধি আছেন পঞ্চায়েত থেকে কাউন্সিলর, বিধায়ক ও সাংসদ তাদের মধ্যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই হলেন জনপ্রিয়। বাম আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হারলেও জ্যোতিপ্রিয় হারেন নি কেবল মাত্র ভালো জনসংযোগের জন্য।

হাবড়ায় কানপাতলে শোনা যায় লোকসভা নির্বাচনে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিধানসভায় বিজেপি এগিয়েছিল দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। কারণ, উত্তর চব্বিশ পরগনায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হলেন একমাত্র বিধায়ক যিনি তার বিধানসভা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা না হয়েও সব থেকে বেশি যাতায়াত করেন। সল্টলেকের বাসিন্দা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক খাদ্যভবন থেকে হাবড়া নিয়মিত যাতায়াত করেন।

বিজেপির বারাসত জেলা সংগঠন সভাপতি শংকর চ্যাটার্জি থেকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সবাই এক সুরে কেন বলছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হাবড়ায় হারবে ? রাজ্যের সব থেকে বেশি আসন উত্তর চব্বিশ পরগনায় । ৩৩ টি বিধানসভার জেলায় যে দল বেশি আসন পায় সেই দলই ক্ষমতায় আসে রাজ্যে । জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রভাব রয়েছে বারাসত ও বনগাঁ লোকসভার আটটি বিধানসভায়। ফলে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে যদি নাস্তানাবুদ করা যায় তাহলে বিজেপির জেতা সহজ হবে।

পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের হওয়ায় জেলা তৃণমূলে বহু জনের চক্ষুশুল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে যদি হারানো যায় তাহলে তৃণমূলে অনেকের নানা রকম সুবিধা হবে বলে দাবি করেন অনেকেই ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad