নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অবশেষে মুকুলই ভরসা! শুক্রবার মেয়ো 'গণতন্ত্র বাঁচাও' মঞ্চ থেকে অন্তত এমনটাই আভাস দিলেন বিজেপির রাজ্য পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বললেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন মুকুল রায়। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকেও তাঁকে সরাবে মুকুল রায়।' রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে কৈলাস বিজয়বর্গীয় এইদিনের বক্তব্যের যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের তরি পার করার জন্য মুকুল রায়ের ওপরই যে নির্ভর করছে দল, পর্যবেক্ষকের এ দিনের বক্তব্যই তার ইঙ্গিত বলে মত বিশ্লেষকদের।
পাখির চোখ একুশের নির্বাচন। রাজ্য শাসন কায়েম করতে ইতিমধ্যেই গুটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে তার জন্য চাই বাঙালির ভাবাবেগ বুঝে চলা দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তি। এই কথাটা অনেক আগেই বুঝেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। বিচক্ষণ, পোড় খাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুকুল রায়। তাঁকে বাদ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে মাটি শক্ত করা যায় না। একথা দিল্লির নেতারা এক কথায় স্বীকার করলেও, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কোথাও চলছিল ইগোর লড়াই। অন্তত গেরুয়া শিবিরে কান পাতলে এমনটাই শোনা যাচ্ছিল। যদিও এই খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ মুকুল রায়। মুকুল রায়ের সঙ্গে বিবাদের কথা অস্বীকার করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতিও। তবে বিজেপির সূত্রে খবর, কৈলাস বিজয়বর্গীর নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে সবাইকে নিয়ে চলার 'সাজেশন' দেওয়া হয় হয়েছে রাজ্যকে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে মান-অভিমান ভঙ্গের পরেই মুকুল দিলীপকে পরপর কয়েক দিন এক মঞ্চে দেখা যায়।
যদিও বিশ্লেষকদের মতে, মুকুল রায়ের মতো তুখোড় রাজনীতিক ব্যক্তিত্বকে পেয়েও কাজে লাগাতে পারছে না বিজেপি। কারণ মুকুল রায়ের বিষয়ে বরাবরই একটা ভয় কাজ করেছে বিজেপির। তৃণমূলের থেকে আসাদের মধ্যে মুকুল রায়ই একজন, যিনি তৃণমূলের অন্দরের দুর্বলতাকে চেনেন জলের মতো স্বচ্ছভাবে। তাই তৃণমূলকে ভেঙে বিজেপিকে প্রতিষ্ঠা করতে তিনিই একমাত্র সক্ষম, যা আজ জনসমক্ষে স্বীকার করে নেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এর পাশাপাশি মুকুল রায়ের ক্ষেত্রে বিজেপির যে ভয়টা কাজ করেছে তা হল, মুকুল রায়ই একজন যিনি একমাত্র পারেন তৃণমূলকে গুঁড়িয়ে দিতে, তেমনই তিনিই একমাত্র যিনি পারেন তৃণমূলকে নতুন ভাবে গড়ে দিতে। মুকুল পুনরায় ঘাস ফুল ধরলে বিজেপির সব কথা যে ফাঁস হয়ে যাবে সেই ভয়েই মুকুলকে দূরে রেখে দিয়েছে দল, যা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে প্রতিষ্ঠিত করতে বাঁধা হয়ে রয়েছে।
No comments:
Post a Comment