নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়ানে দেশ জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোক বার্তা জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতারাও। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর শুনে ভেঙে পড়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও, মঙ্গলবার এমনটাই জানা গিয়েছে তাঁর পারিবারিক সূত্রে। একসময়ের রাজনৈতিক প্রতিযোগীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর পারিবারিক সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মতাদর্শ বিরোধিতা থাকলেও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বরাবরই একটা উষ্ণ সম্পর্ক ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ও সেখানে কারখানা হওয়ার পক্ষেই সায় দিয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও প্রণব মুখোপাধ্যায় যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই সময়ও কখনও প্রকাশ্যে বিরোধে আসতে দেখা যায়নি এই দুই নেতাকে। পরে মুখ্যমন্ত্রীত্ব চলে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। জানা গিয়েছে, তারপর থেকে বেশ কয়েকবার ফোন করে তাঁর খোঁজ নিতেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।
পাঁচ দশকে সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ছিল প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। কিন্তু এই পাঁচ দশকে কখনই প্রকাশ্যে কারও সঙ্গে বিরোধে আসতে দেখা যায়নি তাঁকে। এখানেই হয়তো প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিশেষত্ব। তাই তার মত এরকম একজন রাষ্ট্রনেতার প্রয়াণে আজ বিরোধীদের মুখেও বিষাদের সুর।
২০১২ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ২০১৭ রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর নেন। এর আগে দক্ষতার সঙ্গে সামলেছিলেন অর্থমন্ত্রক। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধীর সময় অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এর সাথেই দক্ষতার সঙ্গে সামলেছিলেন বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও। ছিলেন প্ল্যানিং কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান। সামলেছেন শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বও। কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে পাঁচবার রাজ্যসভায় নির্বাচিতও হয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
No comments:
Post a Comment