গ্রাম্য সালিশিকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়ালো মারা ডাঙ্গী গ্রামে - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 1 September 2020

গ্রাম্য সালিশিকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়ালো মারা ডাঙ্গী গ্রামে


নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাগ্রাম্য সালিশিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ীতে হামলা ভাঙচুর মারধর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলো মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের মারা ডাঙ্গী গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গতরাত্রে একটি ট্রাক দুর্ঘটনায় এলাকার বাসিন্দা আহত হন। এর জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকার মানুষেরা। গাড়িটিকে ওই গ্রামের মানুষরা দীর্ঘক্ষন আটকে রাখে। পার্শ্ববর্তী গ্রাম খোশালপুরের বাসিন্দারা ওই গাড়িটিকে ছাড়াতে এলে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এরপরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সালিশি সভা বসে। সেই সময় জরিমানার টাকা পছন্দ না হওয়ায় ফের বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন ওই গ্রামের বাসিন্দারা।এরপর খোশালপুর গ্রামের বাসিন্দারা মারা ডাঙ্গী গ্রামের নির্বাচিত পঞ্চায়েত মেম্বার সেহেরুনা খাতুনের বাড়ীতে ভাঙচুর চালায়, লুটপাট করে এবং অগ্নিসংযোগও করে বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।

ওই পঞ্চায়েত মেম্বারের স্বামী নুরুল ইসলাম জানান, 'গতকাল সালিশি সভায় টাকার অংক পছন্দ না হওয়াতেই আমার বাড়ীতে হামলা চালায় খোশালপুর বাসিন্দা। আমরা ভয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাই। সে সময় বাড়ীতে ভাঙচুর চালায়, লুটপাট করে এবং তার সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিসংযোগ করে তারা। আমি আজ পুলিশে অভিযোগ জানাতে এসেছি। আমরা চাই দোষীদের উপযুক্ত সাজা হোক।'

এদিকে খোশালপুর গ্রামের মেম্বার রহানুল হক বলেন, 'আমি শুনতে পাই যে মারা ডাঙ্গী এলাকায় একটি ট্রাক দুর্ঘটনা হয়েছে। ওই এলাকার লোকেরা ট্রাকের চাবি এবং মোবাইল ফোন আটকে রেখেছে। আমি এক সিভিক পুলিশকে নিয়ে গিয়ে স্থানীয় মেম্বারের কাছ থেকে ওইসব জিনিসও উদ্ধার করি এবং পুলিশের হেফাজতে করে দিই। আমি ওখানে যতক্ষণ ছিলাম তখন কোন গণ্ডগোল হয়নি।'

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উভয় গ্রামের মেম্বার শাসক দলের। মূলত এই দুই মেম্বারের অনুগামীদের পারস্পরিক বিবাদের কারণে এই গণ্ডগোলের সূত্রপাত।

মারা ডাঙ্গী বাসিন্দা নওশাদ আলী জানান, 'গতকাল রাত্রি আটটা নাগাদ খোশালপুর প্রায় ৩০০ লোক এসে এই গ্রামে হামলা চালায়। এলাকার মানুষদের মারধর করে তারা মেম্বারের বাড়ীতে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এবং আগুন লাগিয়ে দেয়। আমরা প্রাণ বাঁচাতে এলাকায় ছেড়ে পালিয়ে যাই।' একটি ট্রাক দুর্ঘটনা ও সালিশি সভায় কেন্দ্র করে এই গোলমাল এর সূত্রপাত বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে আক্রান্ত মেম্বারের বাড়ীর বৌমা রুখসার পারভীন জানান, 'এলাকায় একটি গন্ডগোলকে নিয়ে সালিশি সভা ছিল। সেই সভার মীমাংসা এক পক্ষের পছন্দ না হওয়ায় তারাই আমাদের বাড়ীতে আক্রমণ চালায় এবং বাড়ী ঘরদোর ভাঙচুর করে এবং আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় বাড়ীতে কোন পুরুষ মানুষ ছিল না। আমরা ভয়ে লুকিয়ে ছিলাম।'

অন্যদিকে খোশালপুরের এক বাসিন্দা তথা ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আসাদ আলী জানান, খোশালপুরের কোন লোকই ওই এলাকায় গন্ডগোল করেনি। মারা ডাঙ্গী লোকেরা নিজেরাই আগুন লাগিয়ে খোশালপুরের নামে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছে। ওদের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এ প্রসঙ্গে চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সজল কান্তি বিশ্বাস জানান, দুই পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীরা ছাড়া পাবে না।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad