প্রেসকার্ড ডেস্ক : দেশের জাল নোটের শহর বলা হয় রাজ্যের মালদা জেলাকে । পাশের মুর্শিদাবাদ পাচারে এক অদ্ভুত ঘোলাটে অন্ধকার। জাল নোট ছাড়াও গোরু, ইলিশ মাছ, ফেন্সিডিল ইত্যাদি বছরে নানা সময়ে ধরা পড়ে। তুলনায় সেভাবে মুর্শিদাবাদের নাম আসে না। জঙ্গি নেটওয়ার্কের পিছনে দরকার অঢেল টাকা। ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয় মাদ্রাসা। নিরপরাধ মুসলিম সমাজের দারিদ্রতাকে কাজে লাগায় জঙ্গিরা। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তখন পুলিশ মন্ত্রী। বাজপেয়ী সরকারকে লেখা চিঠির কথা কে না জানে ? রাজনীতি করতে গিয়ে ধর্মীয় গোড়ামীকে কোলে তুলে যত্ন আত্তি চলল। অথচ, সতর্ক ছিল না পুলিশ গোয়েন্দা থেকে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনীতির এই দূর্বলতা আর পুলিশ গোয়েন্দাদের নজর দেওয়াকে কাজে লাগিয়ে বাংলায় কি জঙ্গি নেটওয়ার্কের জাল বিস্তার করল আলকায়দা। মালদা মুর্শিদাবাদ জেলা দুটির সাথে একদিকে বাংলাদেশ অন্যদিকে বিহার। অর্থাৎ সেফ করিডর।
গত কয়েক বছরে মালদা সাম্প্রদায়িক হিংসা থেকে থানা পুলিশের ওপর হামলা দেখেছে। পাশের মুর্শিদাবাদ তুলনায় শান্ত। পুলিশ থেকে পার্টির নেটওয়ার্ক সত্যিই কি দূর্বল ? সংবাদ মাধ্যম মাঝে মধ্যে জঙ্গি কার্যকলাপের নেটওয়ার্ক নিয়ে প্রতিবেদন করে। পুলিশ ও পার্টির লোকেরা এমনকি গোয়েন্দাদের নজরে পড়ল না কিছুই। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ থেকে তবে শিক্ষা নেয়নি কেউই ?
আলকায়দা বাংলায় জাল বিস্তার করল অথচ রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা টের পেলনা ? প্রশ্নটা আম জনতার মুখে মুখে। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেছেন, পুলিশ তৃণমূল দল সামলাতে ব্যস্ত। বহুবার জঙ্গি কার্যকলাপে নাম জড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের। বাংলার শেষ স্বাধীন সম্রাট সিরাজ দৌলার রাজধানীতে বারংবার জঙ্গি কাদা লাগছে কি করে?
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছিল, আল কায়দার প্রচার শাখা আল ফেরদাউস মিডিয়া দুটি বাংলা প্রচার পত্রিকা প্রকাশ করে। তারবিয়াহ ও দাওয়াহ ইলাল্লাহ নামের দুই প্রচার বাংলা পত্রিকা এবং আইএসের প্রচার বিভাগ আল কিতাল প্রকাশ করে সোয়াট আল হিন্দ ওরফে সোয়াট আল হিন্দ নামের ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার প্রচার পত্রিকা। সামাজিক মাধ্যমের চ্যানেলে প্রচার করা কনটেন্টে জিহাদের প্রকৃতি এবং জিহাদের মাধ্যমে ইসলামীক রাষ্ট্র তৈরির নক্সা ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে।
2918 সালে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত করেছিল আলকায়দা। দাওয়াহ ইলাল্লাহ পত্রিকা সে কথা স্বীকার করেছিল তখন। ভয়েস অব হিন্দ ভারতের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সামনে জিহাদই একমাত্র রাস্তা - ঘোষণা করে মগজ ধোলাইয়ের কাজ করে। একাজে আলকায়দা হাতিয়ার করে সিএএ, এনআরসি আর রাম মন্দির ইস্যু।
বিশ্ব জুড়ে ইসলামিক জঙ্গি কার্যকলাপের ওপর গবেষণা করা সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ প্রকাশ করে বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক তৈরিতে সফল হয়ে আলকায়দা ভারতে নেটওয়ার্ক তৈরিতে তৎপর। মানুষের নানা ধরণের আন্দোলনের মধ্যে আলকায়দার নেটওয়ার্কের সদস্যরা ঢুকিয়ে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা করে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীতায় বাংলায় যে রোষ, ধ্বংস, আগুন, ভাঙচুর হয়েছিল তা পরিকল্পিত ছাড়া সম্ভব নয়। হতে পারে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আলকায়দার নেটওয়ার্কের সদস্যরা ছিল। মুর্শিদাবাদের গ্রেফতারী প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের একাংশের ধারণা, অতদ্রুত রেল স্টেশন ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে রেল লাইন উপড়ে ফেলা রাজ্যে এর আগে হয়নি। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থাকতেই পারে আলকায়দার নেটওয়ার্ক। পুলিশ গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিলনা? পুলিশ কর্তাদের দাবি, মামলার তদন্ত করার পুলিশ নেই পর্যাপ্ত সেখানে জঙ্গি নেটওয়ার্কের খোঁজ করবে কি করে?
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, গত কয়েক বছরে আইএস এবং আলকায়দা নিজেদের কর্ম পদ্ধতি অনেকটাই বদলেছে। বর্তমানে তারা নানা দেশে স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সদস্য ঢুকিয়ে প্রকাশ্যে স্নিপার করার পাশাপাশি কট্টরবাদী ধর্মীয় সংগঠনে টাকা ঢেলেছে আইএস - আলকায়দা।
No comments:
Post a Comment