নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর দিনাজপুর: সেই ছোট্টোবেলায় ছাত্র জীবনে ভূগোলের প্রেমে পড়েছিলেন। শিক্ষকতা জীবনে সেই প্রেম এখন পরিনত হয়ে ঘরে ঘরে মাইক্রো লেভেল আবহাওয়া দপ্তর তৈরী করার মতো ভূগোল প্রেমী বানাবার স্বপ্ন দেখছে৷ চিরকাল পেছন বেঞ্চের পড়ুয়াদের সামাজিক মুল্যায়নের পক্ষে কথা বলা উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের ভূগোল প্রেমী শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায় খুঁটিনাটি জিনিসের ব্যবহারে নিজের বাড়ীর ছাদেই বানিয়ে ফেলেছেন মিনি আবহাওয়া দপ্তর।
বিশ্বজিৎ রায়, রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষক। ছোটো বেলা থেকে ভূগোলের প্রতি আকর্ষন বোধ করতেন। বাবা, মা ডাক্তার বানাতে চাইলেও সেই ভূগোল প্রেম বিশ্বজিৎ বাবুকে ভূগোলের শিক্ষক বানিয়েছে। রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। স্কুলে একটি মিনি আবহাওয়া দপ্তর মুলত তার পরিচালনায় চলে। ভূগোল প্রেম, তাকে ভাবিয়েছে কিভাবে মাইক্রো লেবেল আবহাওয়া দপ্তর বানানো যায়। কত কম খরচে খুঁটিনাটি জিনিসের ব্যবহারে কিভাবে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, আপেক্ষিক আর্দ্রতা মাপা যায়। এইসব ভাবনা থেকেই নিজের বাড়ীর ছাদে তৈরী করে ফেলেছেন মিনি আবহাওয়া অফিস। সেই ছাদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে বায়ুর গতিবেগ, তাপমাতা, আবহাওয়ায় আপেক্ষিক আর্দ্রতা বা বৃষ্টিপাতের পরিমান, সবটাই মেপে ফেলেন নির্ভূল ভাবে।
এখানেই থেমে থাকেননি বিশ্বজিৎ বাবু, ভূগোলের পাশাপাশি আরও একদিক তাকে টানে, তা হল মহাকাশ। মহাকাশের গবেষণার জন্য নিজেই বানিয়ে ফেলেছেন টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপে নজর রেখে মহাকাশে বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্রের ওপরেও চলে বিশ্বজিৎ বাবুর নজরদারি। পড়ুয়াদের মহাকাশ চেনানোর পাশাপাশি নিজের মেয়ে স্বয়ংপ্রভাকেও মহাকাশ, ভূগোল চেনানোর কাজ করেন বিশ্বজিৎ স্যার। বিশ্বজিৎ বাবুর মেয়ে জানিয়েছে বাবাকে ভয় পেয়ে নয়, ভূগোল ও মহাকাশকে এমনিতেই ভালোবেসে ফেলেছে সে৷ ইতিমধ্যেই চিনে ফেলেছে বেশ কিছু গ্রহকে।
বিশ্বজিৎ বাবুর আশা একদিন সাধারণ পড়ুয়াদের মধ্যেও ভূগোলের প্রতি প্রেম জাগবে। সাধারণ পড়ুয়ারাও নিজেদের এলাকার আবহাওয়াকে জানতে বানিয়ে ফেলবে মিনি আবহাওয়া দপ্তর৷ সেদিন আর কাউকে বড় বড় আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না৷ সেদিনই সফল হবে মাইক্রো লেবেল আবহাওয়া দপ্তর সৃষ্টির স্বপ্ন।
No comments:
Post a Comment