দুর্গা পূজার পরেই বাংলায় কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

বীরভুমের দেউচা পাচামিতে কয়লা খনির বিষয়ে গ্রামবাসীদের সাথে চলমান অচলাবস্থা বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। রাজ্য সরকার দুর্গা পূজার পর থেকে এখানে কয়লা খননের কাজ শুরু করবে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্য সচীব রাজীব সিনহা ৩৫ টি গ্রামের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, যেখানে পুনর্বাসনের সম্পূর্ণ গ্যারান্টির পরে কয়লা খননের পথ পুরো পরিষ্কার হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনাটি, ৩৫০০ একরেরও বেশি জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, কেবলমাত্র দেউচা পাচামি কয়লা ব্লক দিয়ে এলাকার জনগণের পুনর্বাসন কাজ শেষ করার পরে এই পর্বের কাজ শুরু হবে। গ্রামের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের পরে মুখ্য সচিব ঘোষণা করেছেন।

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ট্যুইট করেছেন যে, মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা এবং অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্থানীয় জনগণের সাথে আলাপচারিতার মাধ্যমে এই প্রকল্পটি সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলেছেন। স্থানীয় লোক এবং সমস্ত শুভার্থীদের মনে যা প্রশ্ন ছিল তার সমাধান করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন যে, দেউচা পাচামির মতো একটি বৃহৎ কয়লা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা এটিকে দেশের সামনে একটি মডেল করব। এটি যথাসময়ে সেরা খনন প্রচেষ্টা অনুশীলন করে সকলের সমর্থ‌ন নিয়ে কাজ করা হবে। তিনি বলেছিলেন যে বাংলায় বিকাশ চাকা সঙ্কটের সময়েও থামবে না।

এটি লক্ষণীয় যে, পুনর্বাসন ইস্যুতে রাজ্য সরকার এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে দীর্ঘকালীন অচলাবস্থা ছিল। সূত্র জানায়, বীরভুমের দেউচা‌ পাচামিতে কয়লা খননেরর কাজ শুরু করার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। শুধু এটিই নয়, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের তদন্ত করা এবং ক্লিনচিট দেওয়া সত্ত্বেও, অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কয়লা খনন অঞ্চলে অবস্থিত ৩৫ টি গ্রামের অনুমোদনের বিষয়ে জটিলতা ছিল।

রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণার পরেও গ্রামবাসীদের মধ্যে একটি দ্বিধা ছিল। কারণটি হল বামমোর্চ সরকারের আমলে দেউচায় পাথর খনির কাজ শুরু হয়েছিল। তখন গ্রামবাসীদের কোনও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। এই কারণে, কয়লা খননের আগে লোকেরা পুনর্বাসনের বিষয়ে সংশয়ী ছিলেন। বৃহস্পতিবার, স্থানীয় গৌরঙ্গিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে একদিনের সফরে দেউচা সফরকারী মুখ্য সচিব সিনহা গ্রামবাসীদের প্রতিনিধিদের সাথে একটি বৈঠক করেছেন। তিনি সরকারের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন সংক্রান্ত  সম্পূর্ণ গ্যারান্টি দিয়েছেন।  এরপরেই  গ্রামবাসীরা নরম হয়ে পড়েছিলেন।

খনির কাজ চার ধাপে করা হবে

প্রধান সচীব বলেছিলেন যে দেউচা পাচামি কয়লা খননের ক্ষেত্রে দুর্গাপুজার পরে মোট চার ধাপে খননের কাজ শুরু হবে। মূল খননের কাজটি শুরু হতে প্রায় এক বছর সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে। ততদিন, কোথায় এবং কোথা থেকে দেউচায় কয়লা খননের কাজ শুরু হবে, তার জন্য এই অঞ্চল জুড়ে তদন্ত করা হবে এবং পরিকল্পনাগুলি অঞ্চলে প্রস্তুত করা হবে।