কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভায় জায়গা পেতে চলেছেন মুকুল রায়। দিল্লি সূত্রে খবর, বিজেপির জাতীয় পরিষদের সদস্যকে কয়লা দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। ২০২১- এর কথা মাথায় রেখে বাংলা থেকে দুজনকে মন্ত্রী করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছিল বিজেপি। তার মধ্যে মুকুল রায়কে বড়ো পদ দিয়ে বাংলায় বিদ্রোহীদের একটা বার্তা দিতে চাইছে বিজেপি। সেই পরিকল্পনা থেকেই এমন চিন্তাভাবনা বলে জানা গিয়েছে রাজ্য বিজেপি সূত্র মারফত।
বিজেপিতে যোগদান করার পর মন্ত্রী সভায় ঠাই হয়নি প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর। এমনকি রাজ্য সভাতেও মুকুল রায়কে রাখেনি বিজেপি। তবে রাজ্য নেতৃত্বে তিনি যে থাকতে চান না, তা একাধিকবার ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন তৃণমূলের একসময়ের চাণক্য। এদিকে তৃণমূলের দুই চারজন বড়ো মুখ বিজেপিতে যোগদান করার ব্যাপারে আমতা আমতা করছিলেন। মুকুল রায়কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে একঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছে দিল্লি। তৃণমূলের যোগ্য ব্যক্তিরা বিজেপিতে আসলে তাদের পদ দেওয়া হবে। আর অন্যদিকে মুকুল রায়ের মন্ত্রীর ইমেজকে কাজে লাগানো যাবে ২০২১- এর জন্য। এই লক্ষ্যেই মুকুল রায়কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদে বসাতে চাইছে দল।
এদিকে মুকুল রায়ের মন্ত্রীত্বের কথা শুনে রাজ্য বিজেপিতে তার অনুগামীরা উজ্জিবিত। মুকুল রায়ের এক ঘনিষ্ঠ নেতা দাবি করেছেন, অমিত শাহর সভা শেষ হলেই দিল্লঈর উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন মুকুল রায়। দিল্লিতে গিয়ে বিকেলেই সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করবেন বিজেপির জাতীয় পরিষদের সদস্য। কিন্তু এখনও একটা কথা পরিষ্কার নয়, মুকুল রায় কোন রাজ্যের থেকে রাজ্য সভায় যাবেন। নিয়ম অনুযায়ী, কয়লা মন্ত্রকের মন্ত্রীত্বের চেয়ারে বসতেই পারবেন তিনি। ছয় মাসের মধ্যে তাকে হয় লোকসভায় বা রাজ্য সভায় জিতে আসতে হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশে কোথাও লোকসভার আসনে ভোট নেই। কিন্তু কয়েকটি রাজ্যের রাজ্য সভার ভোট রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ -র নভেম্বরে দলনেত্রীর সঙ্গে বিবাদের জেরে তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করেন তত্কালীন তৃণমূলের সেকন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায়। সেই সময় তার সঙ্গেই দল ছেড়ে ছিলেন তার অনুগামীরা। তারপর থেকেই ভাঙ্গন ধরতে থাকে শাসক শিবিরে। চান্যক্যের ভূমিকা পালন করে, একে একে তৃণমূলের প্রচুর দাপুটে নেতাকে গেরুয়া শিবিরে টানতে থাকেন মুকুল রায়। বাদ যায়নি বিরোধী দল গুলোও। শুরু হয়ে যায় মুকুল ম্যাজিক। যার প্রভাবেই ২০১৪ সালে ২ টি আসনের পর ২০১৯- এর লোকসভা ভোটে এক লাফেই পশ্চিমবঙ্গে ১৮ টি আসন দখল করে বিজেপি। তবে তার পরেও দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হয়েই থেকে গিয়েছেন তিনি।
যদিও ২০১৯- এ নভেম্বরে দলের অন্দরের হাওয়া বদলের খবর প্রকাশ্যে আসে। বিজেপি সূত্র মারফত জানা যায়, জাতীয় স্তরে বিজেপির কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ অথবা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় একটি আসন পেতে পারেন মুকুল রায়। সেক্ষেত্রে সর্বভারতীয় বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক করে তাঁকে রাজ্য পর্যবেক্ষক করা হতে পারে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়ে যায় কলকাতার ৬ নম্বর মুরলীধর লেন স্ট্রিটে। যদিও সে বিষয়ে রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সুচারু নেতা মুকুল রায়ও এই বিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে দিল্লি সূত্রে খবর অনুযায়ী, এবার হয়তো চাণক্যর ‘ভাগ্যের চাকা’ ঘুরতে চলেছে।

No comments:
Post a Comment