প্রতিবেদন, শিপ্রা হালদার: বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তথা ভারতবর্ষে চায়না প্রোডাক্ট বহিষ্কার নিয়ে খুব চর্চা হচ্ছে। এর পিছনে লুকিয়ে থাকা আসল কারণটি কি? গত ৭ দশকে চীনের আর্থিক বিকাশ আমেরিকার থেকে প্রায় ৭ গুণ বেশি হয়েছে। কিন্তু, এমন কেন হল? আপনি কি কখনও ভেবেছেন! চায়না জিনিসপত্র সস্তায় পাওয়া যায়। কিন্তু টেকে না। চীনের সম্বন্ধে এই কথাটা খুব কম মানুষই জানে যে, চীন নকল জিনিস তৈরি বা বিক্রিতে সবার প্রথম। তো চলুন চীন সম্বন্ধে এমন কিছু জিনিস আজ জানাবো, যা জানলে হয়তো আপনি অবাক হয়ে যাবেন!
পুনঃব্যবহার: ভারত চীন থেকে অনেক জিনিস নেয়। কিন্তু তা নকল। যে কারণে ভারত সরকার কখনও কখনও ওই প্রোডাক্টগুলো ব্যান করে দেয়। আপনার হয়তো এটা জানা নেই চাইনিজ যে খেলনা গুলি আপনি আপনার বাচ্চার জন্য কিনে দেন তা ব্যবহার করা কন্ডম থেকেও তৈরি হতে পারে। চীন প্রতিটি জিনিসই পুনঃব্যবহার করে যা খারাপ হয়ে যায়। অর্থাৎ, কোন না কোনভাবে খারাপ জিনিস রিসাইকেলিং করে পুনরায় ব্যবহার করে। চীনকে নিয়ে একটা বহুল প্রচলিত কথা আছে- এখানে টেবিল এবং চেয়ারকে বাদ দিয়ে প্রতিটি চার পা যুক্ত জিনিস খাওয়া হয়।
ডগ মিট ফেস্টিভ্যাল: চীনের ইউলিন শহরে প্রতি বছর জুন মাসে ডগ মিট ফেস্টিভ্যাল পালন করা হয়। এক অনুমান অনুযায়ী চীনে প্রতিবছর ১০ মিলিয়নের বেশি কুকুর মারা হয়। শুধুমাত্র মিট ফেস্টিভ্যালে ১০ হাজারের বেশি কুকুর মারা হয়।
ইউরিন: এখানে ভার্জিন ছেলেদের ইউরিনে ডিম সিদ্ধ করে খাওয়া হয়। চীনে এই পরম্পরা কয়েকশো বছর ধরে চলে আসছে। এজন্য লোকাল স্কুল থেকে ইউরিন সংগ্রহ করা হয়। তারা মনে করে এই ডিম খেলে কোমর, পায়ে ব্যথা-যন্ত্রণা হয় না এবং সারাদিন এনার্জিটিক থাকা যায়। এছাড়া তেলাপোকা, ইঁদুর, কুকুর প্রভৃতিও তারা খায়।
নকল ক্রিসমাস ট্রি এবং দিওয়ালি লাইট: চীনে ফেস্টিভ্যালের নামে কিছু ফেস্টিভ্যাল পালন করা হয়। যেমন- ওখানে সাধারণত খ্রীষ্টমাস পালন করা হয় না বা হিন্দুদেরও কোন অনুষ্ঠান পালিত হয় না। তা সত্ত্বেও ৮৫ শতাংশ নকল ক্রিসমাস ট্রি আর ৭০ শতাংশ দিওয়ালির লাইট ওখানে বানানো হয়।
ট্রাফিক জাম: ২০১০ সালে চীনের সাংহাই শহরে একশ কিলোমিটার লম্বা ট্রাফিক জাম হয়েছিল। এই জাম ১২ দিন পর্যন্ত ছিল।
দূষণ: চীনে প্রতি ৩০ সেকেন্ডে এমন শিশুর জন্ম হয়, যারা জন্ম থেকেই বিকলাঙ্গ। এর কারন হল ওখানকার দুষণ। চীনে অনেক ছবিতেই মাস্ক পরা মানুষ দেখা যায়, এর পিছনে কারণটি হল ওখানকার ব্যাপক দূষণ। চীনের রাজধানী বেজিং-এ একদিন শ্বাস নেওয়া শরীরে এতটা খারাপ প্রভাব ফেলে যেটা এক প্যাকেট সিগারেট খেলে হয়। ‘গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’ ছাড়াও এখানকার দূষণ মহাকাশ থেকে দেখা যায়।
আইন ব্যবস্থা: চীনের ধনী ব্যক্তিরা নিজের বদলে অন্যকে জেলে পাঠাতে পারে। চীনে এত আত্মহত্যা হয় যে ওখানে নদী থেকে ডেড বডি তোলার জন্য চাকরি পাওয়া যায়। এক সার্ভে অনুযায়ী, পৃথিবীর ১৮ শতাংশ মানুষ চীনের অধিবাসী। ২০০৯ সাল থেকে চীনে ফেসবুক এবং ট্যুইটার ব্যান করা হয়েছে। চীনের সাংহাই শহরে লাল রঙের গাড়ি রাখা আইনবিরোধী। আপনি এটা জেনে অবাক হবেন সেক্সটয় বিক্রিতেও চীন পৃথিবীতে প্রথম। আমেরিকার থেকে বেশি মানুষ চীনে ইংলিশে কথা বলে।
নকল চাল ও মধু: নকল জিনিস বানানোয় চীন এতটাই এগিয়ে গেছে, বর্তমানে চালও নকল বানাচ্ছে। চীনে তৈরি এই চালকে প্লাস্টিক রাইসও বলা হয়ে থাকে। এই চাল সিদ্ধ করার পরেও নরম হয় না। আর এই চাল খাওয়ার ফলে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এত কিছু হওয়ার পরেও চীনে এই চাল খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এই চাল এতটা ক্ষতিকারক যে, যদি আপনি তিন বাটি নকল চাল খেয়ে ফেলেন, তাহলে আপনি একটি প্লাস্টিক ব্যাগ খেয়ে নিলেন। তাহলে বুঝতে পারছেন এই চাল খাওয়া কতটা ক্ষতিকারক। চীনে মধুও নকল তৈরি করে বিক্রি করা হয়। নকল মধু তৈরি করতে মাত্র ১০০ টাকা খরচ হয়। আর ওই নকল মধু ৬০০ টাকা প্রতি কেজি দরে বাজারে বিক্রি হয়।
এবার তো আপনি বুঝতে পারছেন, কেন চীনের জিনিস কম দাম হয় আর টেকসই হয় না? এত কিছুর পরেও যদি আপনি চায়না জিনিসপত্র কিনে থাকেন তাহলে বলে রাখি চায়না জিনিসপত্র কেনা মানে আমাদের বাহাদুর সেনাদের বলিদানকে অসম্মান করা। চায়না জিনিস বয়কট করুন। এছাড়াও আপনি কি আপনার বাচ্চাকে ব্যবহার করা কন্ডম দিয়ে তৈরি খেলনা দিতে চাইবেন? কে জানে কত বাচ্চার এই কারণে কত রোগ হয়ে গেছে! এইজন্য চায়না দ্রব্যকে বলুন 'না'।
No comments:
Post a Comment