গভীর সমুদ্রের জোনাকি - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 30 June 2020

গভীর সমুদ্রের জোনাকি







 মঙ্গলের পৃষ্ঠ সর্ম্পকে আমরা কতটুকু জানি? খুব সামান্যই বলা যায়! কিন্তু, এর চেয়েও অনেক কম জানা সম্ভব হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাসস্থান সম্পর্কে। গভীর সমুদ্র! সমুদ্রের ২০০ মিটারের পর থেকে সূর্যের আলো পৌঁছায় না বললেই চলে। সমুদ্রের এই গহীন অন্ধকারময় অংশকে মিডনাইট জোন বলা হয়।


এখানে কোন আলো নেই! পৃথিবীর দুর্গমতম এই অংশে এলিয়েনের মতো প্রাণীদের বসবাস। যারা নিজেরাই আলো তৈরী করে যা ‘বায়োলুমিনিসেন্স’ নামে পরিচিত। কিন্তু, কেন এরা আলো তৈরি করে? সঙ্গীকে আকৃষ্ট করা এবং শত্রুকে প্রতিহত করাই এই আলোর মূল উদ্দেশ্য। শিকারিরা নিজেদের আলোকসজ্জিত রাখে, শিকারকে আকৃষ্ট করতে। তারপরও, এই আলোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানি!


 মিডনাইট জোনের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ শিকারীর নাম ফ্যাংটুথ। আকার অনুপাতে এদের দাঁত সর্ববৃহৎ। এই মারাত্মক শিকারীদের শিকারগুলোও কম কিসে? আলোর ঝলকানিতে তারা ফ্যাংটুথকে দিশেহারা করতে ওস্তাদ। কিছু প্রাণী নিজেরা আলো তৈরি করতে না পারলেও আলোকিত অণুজীব শরীরে ধারণ করে। ফ্লাসলাইট ফিশ চোখের নিচে বিশেষ অঙ্গে আলোক উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়া চাষ করে। শিকারি প্রাণীদের কাছে এরা দেখতে বিভ্রান্তিকর আলোকচ্ছটা ছাড়া আর কিছুই না। আলোগুলো সমুদ্রের নিচে খাবার খুঁজতে হেডলাইটের কাজ করে। আলো কাজে লাগে সঙ্গীর সাথে ভাবের আদান-প্রদান করতেও। কার্ডিনাল ফিশ ছোট প্রাণীদের শিকার করতে পটু। কিন্তু, এরা যখন কোন অস্ট্রাকডকে গিলে ফেলে, দৃশ্যটি হয় নান্দনিক। অস্ট্রাকড আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাতে থাকে, ফলে কার্ডিনাল ফিশ এটিকে উগরে দিতে বাধ্য হয়। সমুদ্র মানুষের মধ্যে হাজার হাজার বছর ধরে শিহরণ জাগিয়ে এসেছে এবং এখনও সমুদ্রের ৯০ শতাংশ আমাদের জানার বাইরে। ভবিষ্যৎ বলে দেবে, গহীন সমুদ্রে আরও কত বিষ্ময় লুকিয়ে আছে।

                                                                                                                    শিপ্রা হালদার

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad