লকডাউনে দীর্ঘ সময় আটকে লড়িতে চেপে বাড়ী ফিরতে গিয়ে দুই লড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বাসিন্দা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক আকবর আলির।
উল্লেখ্য উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে যান প্রায় শতাধিক বাসিন্দা। তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭ মাস আগে হেমতাবাদের নওদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাড়াইলের রামপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর ২২-এর আকবর আলি রাজস্থানে কাজে যায়। ওই গ্রামেরই স্থানীয় এক বাসিন্দার সূত্রে রাজস্থানে প্যান্ডেলের কাজ করতেন আকবর। এদিকে করোনা প্রতিরোধে দেশে লকডাউন শুরু হওয়ায় অন্যান্যদের মত আকবরও নিজের কর্মস্থলেই আটকে পড়ে। আর কিছুদিন আগে নওদার ওই গ্রামের তার ঠিকাদার ফিরে এলেও আকবর এবং বাকিরা ফিরতে পারেনি। এদিকে গত শুক্রবার রাতে শেষ ফোনে তার বাড়ীতে জানায় যে তারা কয়েকজন মিলে লড়িতে চেপে রাজস্থান থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে ফিরছে। লড়িতে চাপার পড়েও একবার বাড়ীতে ফোন করে সে জানায় বলে তার মা আসমা বেগম জানান। কিন্তু ছেলের সাথে তার সেই শেষ ফোনালাপ। অবশেষে রাত প্রায় দুটো নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে আকবরের বাড়ীতে ফোন করে ছেলের মৃত্যুর খবর জানান আকবরের এক সঙ্গী। জানা গেছে, আকবর সহ মোট প্রায় ১৬জন পরিযায়ী শ্রমিক যেই লড়িতে চেপে আসছিলেন, রাত প্রায় সাড়ে বারোটা থেকে একটা নাগাদ সেটি রাজস্থানের কুনওয়ারি থানা এলাকায় জাতীয় সড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা ইস্পাত বোঝাই একটি লড়ির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। যে কারনে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হেমতাবাদের আকবর আলির।
এদিকে খবর ছড়িয়ে পড়তেই শয়ে শয়ে গ্রামবাসীরা ভীড় জমান আকবরের বাড়ীতে। ছুটে আসে হেমতাবাদ থানার পুলিশ প্রশাসন এবং হেমতাবাদের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক পৃথ্বীশ দাস। আসেন যুব তৃনমুল নেতা গৌতম পাল, তৃণমূল নেতা প্রফুল্ল বর্মন সহ অন্যান্যরা। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী এই যুবকের মৃত্যুতে শোকের আবহ তৈরি হয়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন আকবরের বাবা মুকসেদ আলি, মা আসমা বেগম সহ তার তিন বোন ও পরিজনেরা। এদিন ওই পরিবারের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন গৌতম পাল। তাছাড়া সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সরকারি অনুদান প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও পৃথ্বীশ দাস। প্রশাসন তাদের থাকবে।

No comments:
Post a Comment